শাহপরীর দ্বীপ, ভ্রমণ গাইড ও খরচসমূহ

শাহপরীর দ্বীপ 

শাহপুরা বা শাহপরীর দ্বীপ বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নে অবস্থিত একটি দ্বীপ। শাহপরীর দ্বীপ এর বাম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নাফ নদী যা বাংলাদেশ কে মিয়ানমার থেকে আলাদা করেছে। টেকনাফ থেকে শাহ পরীর দূরত্ব ১৩.৭০ কিমি। মাত্র ৪০ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে এই দ্বীপে। মাছ ধরা ও লবন চাষ তাদের মুল পেশা। 

এই দ্বীপে মসজিদ, মাদ্রাসা, হাট বাজার সবই রয়েছে। 

এখানে সাগরে নামতে হলে নিতে হবে বিশেষ সতর্কতা। কারন এই দ্বীপে কোন লাইফ গার্ডের ব্যাবস্থা নেই। তাই জোয়ার ভাটার সময় নির্ণয়ের কোন ব্যাবস্থা নেই। তাই নিজেকে জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিতে হবে। বিশেষ করে ভাটার সময় সাগরে ভুল করেও নামা যাবে না। 

আরও পড়ুনঃ-

নামকরন

শাহপরীর দ্বীপ sah porir dip

এই দ্বীপের নামকরন সম্পর্কে কথিত আছে, সম্রাট শাহ্‌ সুজার শাহ আর তার স্ত্রী পরী বানুর পরী শব্দ মিলিয়ে এই দ্বীপের নাম রাখা হয়। আবার অনেকের মতে শাহ্‌ ফরিদ আওলিয়ার নামে এই দ্বীপের নাম হয়। অনেকে মনে করে রোখাম রাজ্যের রানী কয়রা পরীর মেয়ে শাহ্‌ পরীর নামে এই দ্বীপের নামকরন হয়। 

আয়তন 

স্বাধীনতা পূর্বে শাহপরীর দ্বীপ এর আয়তন ছিল দৈর্ঘ্যে ১৫ কিমি আর প্রস্থে ১০ কিমি। কিন্তু বর্তমানে দ্বীপের আয়তন কমে দৈর্ঘ্য ৪ কিমি ও প্রস্থ ৩ কিমি। এখানে জনসংখ্যা সর্বমোট ৪০ হাজার।

শাহপরীর দ্বীপ- এ দর্শনীয় স্থান 

শাহপরীর দ্বীপ এ তিনটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে। এই দ্বীপ থেকে মায়ানমারের মংদু প্রদেশ, আরাকান পাহাড় ও সেন্টমার্টিন দেখতে পাওয়া যায়। এখানে ঘুরতে আসলে দেখতে পাবেন জেলেদের সাগরের সাথে প্রতিদিনের সংগ্রাম করে বেচে থাকার লড়াই। এছাড়াও রয়েছে বিস্তীর্ণ লবন চাষের জমি।  

এছাড়াও শাহ্‌ পরীর দ্বীপে যাওয়ার পথে দেখতে পাবেন রোহিঙ্গা বস্তি, আদিবাসী পাড়া, পাহাড়ি গুহা ও মাথিন কূপ। এই দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন খুব কাছে হওয়ায় চাইলে ট্রলারে বা বোটে চরে ঘুরে আসতে পারেন। চাইলে এই দ্বীপে তাবু টাঙ্গিয়ে ক্যাম্পিংও করতে পারেন। এখানে বিডিআর চৌকি ও ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। 

কিভাবে যাবেন 

ঢাকা থেকে বাসে

ঢাকা থেকে বাসে সরাসরি টেকনাফ যাওয়া যাই। এছারা ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেয়ে সেখান থেকে বাসে টেকনাফ যাওয়া যায়। সকাল ৬টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে টেকনাফের উদ্দেশে বাস ছারে। তবে বর্ষাকালে বাস ছাড়ার সময়ে হেরফের হতে পারে। প্রায় ৮০ কিমি পথ পারি দিতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে আর জনপ্রতি বাস ভাড়া ১৪০ টাকা। চাইলে রিজার্ভ সিএন জি নিয়ে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাওয়া যায়। 

শুকনো মওসুমে টেকনাফ থেকে সিএনজিতে করে শাহ্‌পরীর দ্বীপে যেতে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের কিছু বেশি সময় লাগে। বর্ষাকালে অর্ধেক পথ সিএনজি আর বাকি অর্ধেক পথ ট্রলার ভাড়া করে যেতে পারেন। ভাড়া জনপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা পড়বে। টেকনাফ থেকে শাহ পরীর দ্বীপে যেতে ভাড়া লাগে ১০০ টাকা।  

কোথায় থাকবেন 

দ্বীপে এলজিইডির একটি বাংলো রয়েছে। সেখানে থাকতে হলে অগ্রিম যোগাযোগ করতে হবে। ২০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়াতে সহজেই থাকা যাবে। তবে এখানে থাকতে হলে শাহপরীর দ্বীপ এ যেয়ে আপনাকে উপযুক্ত কারন দেখাতে হবে। তবেই সেখানে থাকা সম্ভব। ট্রলার বা বোট গুলোর যাতায়াত এর সময় জেনে নিন। কারন ট্রলার গুলো নিয়মিত যাতায়াত করে না। 

আর একান্তই থাকার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল নে টং সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। যোগাযোগঃ ফোন- ০৩৪২৬- ৭৫১০৪, নন এসি ডাবল রুম ১৩০০ টাকা, এসি ডাবল রুম ১৯০০ টাকা, এসি স্যুইট ৩১০০ টাকা। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু সাধারন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ-

মন্তব্য করুন