নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান ভ্রমন

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

আমরা সকলে জানি যে, নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে অবস্থিত একটি শহরের নাম হলো, নারায়ণগঞ্জ। মূলত এই শহরটি সর্ব প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, ১৯৮৪ সালে। তবে এই শহরটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে নারায়ণগঞ্জ ঢাকা জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর বর্তমান সময়ে নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যতম একটি শহরে পরিণত হয়েছে।

কেননা নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী বন্দর এবং ব্যবসা বাণিজ্য কেন্দ্র। এছাড়াও পাটবাণিজ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা সহ দেশের বৃহৎ বৃহৎ টেক্সটাইল সেক্টর গুলো নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। তবে এগুলোর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান এর দিক থেকেও অনেক এগিয়ে রয়েছে।

কেননা আপনি যদি ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ যেতে পারেন তাহলে। আপনি পানাম নগর, আদমজী জুট মিলস, বাবা সালেহ মসজিদ, গোয়ালদী মসজিদ, ষাট গম্বুজ মসজিদসহ আরো এত বেশি দর্শনীয় স্থান দেখতে পারবেন, যা সত্যি অবাক করে দেওয়ার মতো। চলুন জেনে নেওয়া যাক নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান গুলোর সম্পর্কে।


আরও পড়ুনঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত : সমুদ্র কন্যা, পটুয়াখালী


নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান সমূহ

আমরা যখন কোন স্থানে ভ্রমণ করতে যাই, তখন আমাদের মাথায় যে প্রশ্নটি আসে সেটি হলো, সেই স্থানে ভ্রমণ করতে গেলে আমরা কি কি দর্শনীয় স্থান দেখতে পারব। তো আপনি যদি ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ আসতে পারেন। তাহলে আপনি যে সকল দর্শনীয় স্থান দেখতে পারবেন।

১. পানাম নগর

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে পানাম নগর অন্যতম। রাজধানী ঢাকা শহর এর পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার মধ্যে অবস্থিত দর্শনীয় স্থান পানাম নগর। তবে বর্তমান সময়ে আমরা অধিকাংশ মানুষ এই স্থানকে পানামা নগর বললেও।

উক্ত স্থানটি, ”হারানো নগরী” নামেও বেশ সুপরিচিত একটি স্থান। আর ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, প্রায় ১৫ শতক এর মধ্যে ঈশা “খা” সর্বপ্রথম সোনারগাঁও এর মধ্যে একটি রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। এবং সেই স্থানটির মোট আয়তনের পরিমাণ ছিল প্রায় ২০ বর্গ কিলো মিটার।

তবে আপনি যদি ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে পারমা নগর যান। সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার ভ্রমণ কে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য উক্ত স্থানে বিভিন্ন দর্শনীয় দিক লক্ষ্য করতে পারবেন। আর পানামা নগর ভ্রমণ কালীন সময়ে আপনি যে সকল দর্শনীয় দিক লক্ষ্য করতে পারবেন, সে গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমনঃ-

  • এখানে রয়েছে লোক ও কারুশিল্পের জাদুঘর।
  • এছাড়াও আপনি প্রায় 400 বছরের পুরনো টাকশাল বাড়ি এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৈরীকৃত “নীলকুঠি” দেখতে পারবেন।
  • পানাম নগরে আপনি বিভিন্ন ধরনের চিত্রশালা, নাচ ঘর, মঠ, মন্দির, গির্জা, মসজিদ সহ আকর্ষণীয় সব গুপ্ত পথ দেখতে পারবেন।
  • এগুলোর পাশাপাশি পানামা নগরীর মধ্যে থাকা অনেক প্রাচীন স্থাপনার নির্মাণশৈলী আপনার নজর কাড়বে।
  • পানাম নগরীর চারপাশ দিয়ে ঘেরা পঙ্খিরাজ খাল সহ মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

আপনি যদি নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণকালে পানামা নগর ভ্রমণ করেন। সেক্ষেত্রে আপনার কোন কোন দর্শনীয় দিক গুলো উপভোগ করা উচিত। সে গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি পানামা নগর ভ্রমণ করার সময় এই দর্শনীয় দিক গুলো আপনার কাছেও অনেক ভালো লাগবে।

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

 

২. জিন্দা পার্ক

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় একটি স্থানের নাম হল, জিন্দা পার্ক। যে স্থানটি মূলত ১৫০ একর এলাকা জুড়ে অবস্থান করে আছে। আপনারা যারা ভ্রমণ পিপাসু মানুষ, যারা নিয়মিত গ্রহণ করেন। তাদের ভ্রমন করার জন্য উপযুক্ত একটি স্থান হবে, জিন্দা পার্ক।

কেননা আপনি যখন জিন্দা পার্ক এর মধ্যে ভ্রমণ করবেন তখন আপনি এখানে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির গাছ দেখতে পারবেন। এছাড়াও আপনার সামনে আসবে পাঁচটি জলধারা। আর এই সম্পূর্ণ স্থানটি সবুজের আচ্ছাদনে পরিপূর্ণ। তাই আপনি যদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে চান। তাহলে অবশ্যই সময় ও সুযোগ করে নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে থাকা জিন্দা পার্ক ভ্রমণ করে আসবেন।

এই বিশেষ পার্ক এর মধ্যে আপনি মাটির ঘর থেকে শুরু করে বড় বড় মার্কেট এবং সুন্দর সুন্দর স্থাপত্য শৈলী সমৃদ্ধ লাইব্রেরী লক্ষ্য করতে পারবেন। এছাড়াও রয়েছে ভোজন করার জন্য মানসম্মত ক্যান্টিন, রয়েছে বিভিন্ন পশু পাখির সমন্বয়ে সমৃদ্ধ মিনি চিড়িয়াখানা। এছাড়াও আপনি আকর্ষণীয় সব নৌবহর ও সুসজ্জিত নৌকার ভ্রমণের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান ভ্রমন

 

৩. গিয়াস উদ্দিন সাহেব সমাধি

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয়স্থান গুলোর মধ্যে আরও একটি অন্যতম স্থান গিয়াস উদ্দিন সাহেব সমাধি। নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণ করবেন, অথচ সুলতান গিয়াস উদ্দিন সাহেব সমাধি ভ্রমন করবেন না তা কি করে হয়। কেননা আপনি যদি এই স্থানটি ভ্রমণ না করে চলে আসেন। তাহলে আপনার ভ্রমণের অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে যাবে।

কারণ হলো, নারায়ণগঞ্জ এর মোগড়া পাড়ায় অবস্থিত সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি সম্পূর্ণ কালো পাথর দিয়ে তৈরি। যার আকার হল ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা এবং ১.৫০ মিটার পর্যন্ত চওড়া। আর উক্ত সমাধির মোট উচ্চতা হল ৯০ সেন্টিমিটার।

তবে আপনি চাইলে মাত্র এক দিনের ভ্রমণ করে উক্ত সমাধি স্থান ঘুরে আসতে পারবেন। সে জন্য আপনি সরাসরি ঢাকা গুলিস্তান থেকে বাসযোগে উক্ত স্থানে আসতে পারবেন।

আপনি চাইলে উক্ত স্থান টি একদিনের মধ্যে এসে ভ্রমণ করে আবার ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু আপনারা যারা এখানে এসে থাকবেন, তাদের কে নারায়ণগঞ্জ সদরের মধ্যে এসে বিভিন্ন হোটেল গুলোতে অবস্থান করে থাকতে হবে।


আরও পড়ুনঃ কাশ্মীর ভ্রমন ও বাজেট ট্যুর প্ল্যান


৪. মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

প্রায় ১৮৮৯ সালে “রামরতন বাবু” নামক জমিদার মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর আপনি যদি এই মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে যান। তাহলে আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন যে, এই জমিদার বাড়িটি প্রায় ৬২ বিঘা জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে।

যদিও বা পরবর্তী সময়ে এই জমিদার বাড়িটি বিভিন্ন ভাবে সংস্কার করা হয়েছে। তবে ভ্রমণকারীদের জন্য দেখার মতো রয়েছে বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন। এর প্রধান কারণ হলো, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটির মোট ৯৫ টি কক্ষ নিয়ে গঠিত। যে কক্ষ গুলোর মধ্যে রয়েছে বড় বড় মন্দির, অতিথি শালা সহ বিভিন্ন ধরনের বৈঠকখানা।

এছাড়াও এই জমিদার বাড়ির সামনে এবং পিছনে রয়েছে একটি করে পুকুর। আর এত বড় জমিদার বাড়ি থেকে ১৯৪৭ সালে জমিদার রাম রতন বাবু কলকাতা চলে যান। তারপর থেকে এই জমিদার বাড়ি টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও। বর্তমান সময়ে আপনাদের মত ভ্রমন পিপাসু মানুষদের জন্য ভ্রমণ করার উত্তম একটি স্থান হিসেবে পরিচিত হয়েছে।

৫. সুবর্ণগ্রাম

এই বৃহৎ পার্ক টি মোট ১০০ একর জায়গার উপর অবস্থিত রয়েছে। আর উক্ত পার্ক এর অবস্থান হলো নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলায়। যেখানে আপনি একা ভ্রমণ করার পাশাপাশি সপরিবারে গিয়ে পিকনিকের ব্যবস্থা করতে পারবেন। আর উক্ত পার্কের মধ্যে ভ্রমণ করার সময় আপনি নান্দনিক সব আয়োজন লক্ষ্য করতে পারবেন যেমনঃ-

  • ওয়াটার পার্ক
  • মানসম্মত সব রেস্টুরেন্ট
  • কফি শপ
  • কার পার্কিং এর ব্যবস্থা
  • স্পিড বোড
  • পিকনিক স্পট ইত্যাদি

আপনি যদি সুবর্ণগ্রাম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্ট ভ্রমণ করেন। তাহলে আপনি যে সকল আয়োজন দেখতে পারবেন। সে গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

৬. হাজীগঞ্জ দুর্গ ভ্রমণ

যদি আপনি নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে ভ্রমণ করতে আসেন। তাহলে অবশ্যই আপনার হবিগঞ্জ দুর্গ ভ্রমণ করা উচিত। কেননা হবিগঞ্জ দুর্গ হল বিশেষ এক ধরনের জল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যেটি মূলত মুঘল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিলো। তবে আজকের দিনে আমরা এই স্থানটি কে হবিগঞ্জ বললেও। অতীত এর দিন গুলো তে এই স্থানকে বলা হতো, “খিজিরপুর”।

তবে এই বিশেষ জল প্রতিরক্ষার দুর্গটি নির্মাণ করা হয়েছিল জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। আর আপনি যদি ঢাকা মুন্সিগঞ্জ কিংবা নরসিংদী এর আশেপাশ থেকে হবিগঞ্জ দুর্গ ভ্রমণ করতে চান। তাহলে আপনি একদিনেই বিশেষ এই দুর্গটি ভ্রমণ করে আসতে পারবেন।

কিন্তুু দূরদূরান্ত থেকে যারা আসবেন, তাদের চিন্তার কোন দরকার নেই। কেননা এখানে রয়েছে মানসম্মত সব হোটেল ব্যবস্থা। যেখানে আপনি ভ্রমণ করার পাশাপাশি রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

৭.বারদী লোকনাথ আশ্রম

লোকনাথ হলো হিন্দু ধর্মের একজন ব্রহ্মচারী। আর এই ব্রহ্মচারী প্রায় ১৮৬৩ সালে বারদী গ্রামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে লোকনাথ নামক এই ব্রহ্মচারী ১৮৯০ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু তিনি হিন্দু ধর্মের অনুসারী হওয়ার পরেও, তার নির্মিত বারদী লোকনাথ আশ্রম এখন সকল ধর্মের মানুষের অন্যতম একটি ভ্রমণ স্থান।

৮. ফুলের গ্রাম সাবদি

শীতকালে আপনি যদি দৃষ্টিনন্দন কোন স্থানে ভ্রমণ করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনি নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে অবস্থিত সাবদি গ্রাম ভ্রমণ করতে আসবেন। কেননা এই গ্রামের মধ্যে বিভিন্ন ফুলের চাষ করা হয়। আর আপনি যদি শীতকালে এই গ্রামে ভ্রমণ করতে আসেন।

তাহলে আপনি বাহারি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আর এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর প্রচুর পরিমাণ মানুষ এখানে ভ্রমণ করতে আসে।

৯. মেরি এন্ডারসন নারায়ণগঞ্জ

এটি হলো বুড়িগঙ্গ নদীর তীরে অবস্থিত বিশেষ এক ধরনের ভাসমান রেস্টুরেন্ট। যে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট টি ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আর আপনি যদি এই স্থানে ভ্রমণ করতে আসেন, তাহলে এখানে আপনি থাকার জন্য এবং খাওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা লক্ষ্য করতে পারবেন।

কেননা এই স্থানে ব্রিটিশ আমলের তৈরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাত্রি পার করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ঘণ্টা প্রতি রুম ভাড়া নিতে পারবেন। আশা করি, এই স্থানটি ভ্রমণ করার সময় আপনারও অনেক ভালো লাগবে।

১০. সোনারগাঁও জাদুঘর

আমাদের বাংলাদেশ এর বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ছিলেন জয়নুল আবেদীন। আর তিনি 1975 সালে নারায়ণ গঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি লোক ও কারু কারশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তো আপনি যদি ভ্রমণ করার জন্য সোনারগাঁও জাদুঘর যান। তাহলে এখানে আপনি প্রায় ৪ হাজার ৫০০ এর বেশি প্রাচীন নিদর্শন দেখতে পারবেন। যে নিদর্শন গুলো আমাদের বাংলাদেশের অনেক প্রাচীন কালের শিল্পীদের হাতে তৈরি হয়েছে।

১১. সোনাকান্দা দুর্গ

নারায়ণগঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের দুর্গ থাকলেও, সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গ হিসেবে সোনাকান্দা দুর্গ হল অন্যতম। যে দুর্গটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল প্রায় ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে। আর আপনি যদি একজন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ হয়ে থাকেন। তাহলে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই উঁচু দুর্গ গুলো অবশ্যই ভ্রমণ করতে আসবেন।

আর আপনি যদি ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জের আশেপাশে থাকেন। তাহলে আপনি একদিনের ভ্রমণে যাওয়া আসা করতে পারবেন। তবে দূর-দূরান্ত থেকে আসলে আপনি এখানে হোটেল এর মধ্যে রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ কুয়াকাটা ভ্রমণ : যাওয়ার উপায়, হোটেল, খরচ, প্ল্যান

১২. গোয়ালদি মসজিদ

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে অন্যতম একটি ভ্রমণ করার স্থান হলো, গোয়ালদী মসজিদ। কেননা এই মসজিদ টি সুলতানি আমলের একটি স্থাপনা। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এর রাজত্ব কালে তৈরি করা হয়েছিল এই গোয়ালদি মসজিদ। আর ভ্রমন করার উদ্দেশ্যে আপনি যদি এই মসজিদে আসেন। তাহলে আপনি চমৎকার সব টেরাকোটার নকশা এবং পাথরের উপর তৈরি করা নকশার কারুকার্য উপভোগ করতে পারবেন।

১৩. বাংলার তাজমহল

আমরা সকলে জানি যে, পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে একটি হল ভারতের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহল। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই পৃথিবীতে আরো দ্বিতীয় তাজমহল রয়েছে? -যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে শুনে নিন। আমাদের বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের মধ্যে অবস্থিত রয়েছে দ্বিতীয় বাংলার তাজমহল। যাকে অনেকেই ”বাংলার তাজমহল” নামেই ডাকে।

অবাক করার মতো বিষয় হলো, ভারতের আগ্রায় যে তাজমহল রয়েছে। সেই তাজমহলের আলোকেই নির্মাণ করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করা বাংলার তাজমহলকে। আর আপনি যদি আমাদের দেশ থেকে তাজমহল দেখার স্বাদ উপভোগ হতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাও উপজেলায় অবস্থিত এই বাংলার তাজমহল কে দেখতে আসবেন।

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

১৪. সায়রা গার্ডেন রিসোর্ট

এই রিসোর্ট টি অনেকটা নিরিবিলি পরিবেশ এর মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। তবে শুরুর দিকে মাত্র ৩০ বিঘা জমির উপর এটি তৈরি করা হলেও, সময় সাথে সাথে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে এই রিসোর্ট এর আয়তন আরো বেশি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

আর যখন আপনি এই রিসোর্ট এর মধ্যে ভ্রমণ করতে আসবেন। তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে, একটি রিসোর্ট এর মধ্যে যা যা থাকার দরকার। তার সবকিছুই নারায়ণগঞ্জের সায়রা গার্ডেন রিসোর্ট এর মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।

১৫. মায়াদ্বীপ

এটি হলো একটি বিশেষ এক ধরনের চর, যাকে স্থানীয় লোকরা মায়াবীদ্বীপ নামে পরিচিত করেছে। আর এই দ্বীপটি ভ্রমণ কালে যখন আপনি খোলা প্রান্তর এর সাথে থাকা নদীর সমান্তরাল ঢেউ আর অফুরন্ত বাতাস অনুভব করবেন।

তখন আপনি ভ্রমণ কালে এক অনাবিল প্রশান্তির সাগরে ডুব দিতে পারবেন। এবং আপনার মনে হবে, সত্যিই যেন আপনি কোন এক যাদুপরীর মধ্যে এসে পৌঁছেছেন। সে কারণে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এই মায়াদ্বীপ হবে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত একটি স্থান।

১৬. কাইকারটেক হাট

গ্রামীণ অঞ্চলে নির্দিষ্ট একটি দিনে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দোকান সাজানোর আয়োজন কে বলা হয়ে থাকে, হাট। আর আমাদের বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মধ্যে প্রায় শত শত বছর ধরে এই ধরনের হার্ট এর আয়োজন হয়ে আসছে।

যে হাটকে বলা হয়ে থাকে, ”কাইকারকেট হাট”। আপনি যদি এই স্থানে ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে যান। তাহলে লক্ষ্য করতে পারবেন যে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের ক্রেতা এবং বিক্রেতার সমাগম ঘটেছে। যা দেখে আপনার মধ্যেও অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হবে।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা ভ্রমন করার জন্য নারায়নগঞ্জ যেতে চান। তাদের আসলে জানা উচিত নারায়ণগঞ্জের কোন কোন দর্শনীয় স্থান গুলো ভ্রমন করা উচিত। আজকের আর্টিকেলে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আশা করি, আমার এই লেখাটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন।

আর আপনি যদি নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান ভ্রমন বা যেকোনো ভ্রমন সংক্রান্ত আরো কোনো অজানা তথ্য জানতে চান। তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

আরও পড়ুন-

সিলেটের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ

পদ্মা রিসোর্ট (লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ)

মন্তব্য করুন