দেবতাখুম বান্দরবান 

দেবতাখুম

যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে মাঝেমধ্যে মনে হয় কোলাহলবিহীন কোন স্থানে চলে যাই। তেমনই এক জায়গা দেবতাখুম বান্দরবান। খুমের স্বর্গরাজ্য বান্দরবান (Bandarban)। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর বান্দরবানে রয়েছে ছোট বড় অনেক খুম। খুম অর্থ জলাধার। বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত দেবতাখুম (Debotakhum)।

দেবতাখুম (debotakhum) বান্দরবানের অন্যতম দর্শনীয় স্থান, এই খুমের ট্রেইল যেমন সুন্দর তেমনি ভয়ঙ্করও বটে। বিশাল দুটি পাহাড়ের মধ্য দিয়ে চলে গেছে পথ, পথটি ভেলায় করে পাড়ি দিতে হয়। যারা প্রকৃতিকে পছন্দ করে, প্রকৃতিকে খুব কাছে থেকে উপভোগ করতে চায় তাদের জন্য দেবতাখুম অন্যতম।

ভ্রমণপিপাসুরা প্রায়ই ছুটে যায় বান্দরবনের এই খুমে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে। উপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন –

“অনেকদিন ধরেই আমার পাহাড় কেনার শখ 

কিন্তু পাহাড় কে বিক্রি করে তা জানি না 

যদি তার দেখা পেতাম তাহলে দামের জন্য আটকাতাম না। “

পাহাড় এবং খুম দুটোরই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দেবতাখুমে গেলে। অ্যাডভেঞ্চার, ট্রেকিং, ভেলার কায়াকিং সবকিছু মিলিয়ে দারুন কম্বো প্যাকেজ । আজকে আলোচনা করব দেবতাখুম (debotakhum) বান্দরবান সম্পর্কে। জানাবো এর সৌন্দর্য, কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি খাবেন ইত্যাদি সম্পর্কে।

আরও পড়ুনঃ রংপুরের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ গাইড

দেবতাখুম এর সৌন্দর্য 

বান্দরবানের রোয়াংছরি উপজেলায় দেবতাখুমের অবস্থান। স্থানীয়দের মতে, দেবতাখুম প্রায় ৫০ থেকে ৭০ ফুট গভীর এবং এর দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট। চারপাশে নিস্তব্ধ, ভুতুড়ে পরিবেশ, নেই কোন নেটওয়ার্ক। পানির ফোটার শব্দ, ভেলার শব্দ, নিজেদের কথার প্রতিধ্বনি এ যেন অন্যরকম পরিবেশ!  খুম অর্থ গর্ত, যেখানে পানি জমে। এই খুমটি বড় বড় দুই পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত, সূর্যের আলো পৌঁছায় না বললেই চলে। তাই ভেতরের দিকটা অন্ধকার। 

বিশালাকার পাথরের ঢালের মধ্য দিয়ে ঝরনা, নদীর দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যেই আপনাকে কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যাবে। এর খুমের পাশেই রয়েছে শীলবাঁধা ঝরনা এবং দুই পাশে বিশাল জঙ্গল। সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না বিধায়, যতই ভেতরে যাবেন ততই শীতল মনে হবে। খুবই শান্ত এবং কোলাহলমুক্ত এই খুমের পানিও বেশ স্বচ্ছ। এই খুমে যেতে হলে অবশ্যই বাঁশের ভেলায় করে যেতে হবে। সৌন্দর্যের পাশাপাশি উপভোগ করবেন ট্রেকিং এবং ভেলার কায়াকিং।

দেবতাখুম যাওয়ার সঠিক সময় 

আপনি বান্দরবানের দেবতাখুমে (debotakhum) সারা বছরই যেতে পারবেন। কিন্তু ভরা বর্ষায় ঝিরি ও খুমের পানি অতিরিক্ত বেড়ে যায়। এই সময় খুমের ট্রেকিং পথ দুর্গম হয়ে ওঠে। পিচ্ছিল পাথরে পা ফসকে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই বর্ষাকালে আর্মি এই খুমে যাওয়ার অনুমতি দেয় না।

এছাড়াও শীতের শেষ থেকে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত এই খুমের পানি অনেক কমে যায়। তখন এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন না। দেবতাখুম যাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো জুন থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এই সময়ের মধ্যেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারেন। 

কিভাবে যাবেন 

দেবতাখুম (debotakhum) যেতে হলে প্রথমে আপনাকে বান্দরবান যেতে হবে। বাস বা ট্রেন দুই পথেই যেতে পারবেন বান্দরবান। 

বাসে ঢাকা টু বান্দরবান 

ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য এসি বা নন এসি দুই ধরনের বাসই পাবেন। এসি বাসের মধ্যে রয়েছে হানিফ, সেন্টমার্টিন হুন্দাই ও সৌদিয়া পরিবহন। ভাড়া ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। নন এসি বাসের মধ্যে রয়েছে হানিফ, এস আলম, ইউনিক পরিবহন। ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। 

ট্রেনে ঢাকা টু বান্দরবান 

বান্দরবান যাওয়ার জন্য ঢাকা টু চট্টগ্রামগামী যে কোন ট্রেনে উঠতে হবে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিথা, চট্টলা, মহানগর ও গোধূলি সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। ট্রেন ও আসন ভেদে ভাড়া জনপ্রতি ২০০-১০০০ টাকা।

চট্টগ্রাম টু বান্দরবান

চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ, দামপাড়া ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে বান্দরবনে যাওয়ার বাস ছাড়ে। বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবনে যাওয়ার ভাড়া জন প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে। 

বান্দরবান টু দেবতাখুম

 বান্দরবান থেকে দেবতাখুমে যাওয়ার উপায় নিচে বর্ণনা করা হলো –

  • বান্দরবান শহর থেকে রোয়াংছড়ি উপজেলার দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী বাজার এর দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। বান্দরবান শহর থেকে বাসে করে রোয়াংছড়ি এবং সিএনজি করে কচ্ছপতলী বাজারে যেতে হবে। বান্দরবান রোয়াংছড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতি ঘন্টায় রোয়াংছড়ি বাস ছেড়ে যায়। বাস ভাড়া ৬০ টাকা এবং রোয়াংছড়ি থেকে সিএনজি ভাড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। সময় লাগবে প্রায় এক ঘন্টা। 
  • আপনি যদি চান তাহলে বান্দরবান শহর থেকে সরাসরি জিপ বা সিএনজি রিজার্ভ করে কচ্ছপতলী বাজারে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে জিপ ভাড়া হবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। একটি জিপে ১২ থেকে ১৩ জন বসা যাবে। 
  • দেবতাখুম (debotakhum) যাওয়ার জন্য রোয়াংছড়ি থানা ও কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি নেওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিতে হবে। অনুমতি ফর্মের খরচ ৫০ টাকা।
  • রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী বাজারে যেতে হবে সিএনজিতে। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট সময় লাগবে যেতে। 
  • কচ্ছপতলীতে গিয়ে তারপর হাঁটার পথ। পাহাড় ট্রেকিং করে শিলবাঁধা পাড়ায় যেতে হবে। খাবার কিনতে হলে এখান থেকে কিনতে হবে, কেননা কচ্ছপতলীর পর কোন খাবারের দোকান পাওয়া যাবে না। ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মতো সময় লাগবে শিলবাঁধা পাড়ায় যেতে। 
  • শিলবাঁধা থেকে আর মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটার পথ। তাহলেই পেয়ে যাবেন দেবতাখুম। এখান থেকে ভেলা নিয়ে চলে যাবেন খুমের রাজ্যে। ফেরার পথ একই রুটে। 
  • দেবতাখুমে যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে গাইড নিতে হবে। গাইড খরচ সারাদিনের জন্য ১০০০ টাকা। একসাথে ১০ জনের টিমকে গাইড করে একজন গাইড। তবে এর থেকে কম সদস্য হলেও গাইডের খরচ একই থাকবে। গাইড এর অন্যান্য খরচ কে বহন করবে, তা গাইড নিজেই কথা বলার সময় ঠিক করে নিবেন। 
  • দেবতাখুমে (debotakhum) প্রবেশ, লাইফ জ্যাকেট এবং সেখানকার ভেলা ব্যবহার করার জন্য  জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে লাগবে। 

সহজে বলতে গেলে, বান্দরবান > রোয়াংছড়ি > কচ্ছপতলী বাজার > শিলবাঁধা পাড়া > দেবতাখুম 

রোয়াংছড়ি, দেবতাখুম গাইড  

  • রকি : 01855-360264
  • রুন্ময় লাল : 01857-272095
  • আপন জয় তঞ্চইংগা : 01882-267714
  • চিকু : 01890-170803
  • আন সিং মারমা : 01866-885729

আরও পড়ুনঃ কুমিল্লার জেলার দর্শনীয় স্থান

কোথায় থাকবেন 

বান্দরবান থেকে দেবতাখুম (debotakhum) এর উদ্দেশ্যে সকাল বেলা রওনা দিলে সন্ধ্যার মধ্যেই আবার বান্দরবান শহরে ফিরে আসতে পারবেন। বান্দরবন শহরে রয়েছে বেশ কয়েকটি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। বান্দরবানের কয়েকটি হোটেলের নাম নিম্নে দেওয়া হল –

হোটেল হিল ভিউ: বান্দরবান শহরের মূল বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত হোটেল হিল ভিউ।  বেশ ভালো মানের হোটেল এটি। রুম ভাড়া ১২০০-২৮০০ টাকা। 

হোটেল প্লাজা : নিজস্ব রেস্টুরেন্ট রয়েছে হোটেল প্লাজা’র।  ছিমছাম, গোছানো এবং সুন্দর বেশ ভালো মানের হোটেল এটি। রুম ভাড়া ১৫০০-৬০০০ টাকা। 

রিভার ভিউ : বান্দরবান শহরের ভিতর সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত রিভার ভিউ হোটেল। রুম ভাড়া ৬০০- ১৮০০ টাকা। 

হোটেল নাইট হ্যাভেন : বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে নীলাচলের কাছে অবস্থিত হোটেল নাইট হ্যাভেন। রুম ভাড়া ১৫০০-৪০০০ টাকা। 

পর্যটন মোটেল : বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এর কাছে অবস্থিত পর্যটন মোটেল। রুম ভাড়া ১২০০-২৫০০ টাকা।  

কোথায় খাবেন

বান্দরবান শহরেই সকালের নাস্তা করে নিবেন। বান্দরবান বাসস্ট্যান্ডের পাশে রয়েছে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট।  এগুলোর মধ্যে কলাপাতা এবং রুপসী বাংলা বেশ ভালো মানের রেস্টুরেন্ট। ৫০-৭০ টাকার মধ্যেই করে নিতে পারবেন সকালের নাস্তা। 

কচ্ছপতলী বাজারে গিয়ে ট্রেকিং শুরু করার আগেই দুপুরের খাবারের জন্য অর্ডার করতে হবে। কেননা অর্ডার করার পরেই তারা রান্না করে। কচ্ছপতলীতে রয়েছে ৩-৪ টি খাবারের দোকান। মেনুতে পাবেন মুরগীর মাংস,  ডাল, আলুভর্তা।  বিল আসবে জনপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা। খাবার পেতে হলে অবশ্যই আগে অর্ডার করবেন। 

দেবতাখুম ভ্রমণ তথ্য ও সতর্কতা 

  • কচ্ছপতলি বাজারে গিয়ে গাইডসহ আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের ফটোকপি সাথে রাখবেন। 
  • ভেলায় চরার জন্য লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।
  • সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না। পানির নিচে রয়েছে বিশাল বিশাল পাথর, তাই সাবধানে চলবেন। ঁ
  • দেবতাখুমে নেটওয়ার্কের সমস্যা হয়। কচ্ছপতলী বাজারে রবি বা এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক পাবেন শুধু। 
  • মোবাইল এবং পাওয়ার ব্যাংক চার্জ দিয়ে নিয়ে যাবেন। 
  • বান্দরবান শহর বা কচ্ছপতলীতে গিয়ে ট্রেকিং সু কিনে নিবেন। দাম পড়বে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। ট্রেকিং এর জন্য বুট ব্যবহার করতে পারেন।  
  • দল ব্যতীত একা কোথাও যাবেন না। আদিবাসীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন। 
  • বর্ষাকালে শিলবান্ধা ঝরনার পর ট্রেকিং খুব চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে। কারণ ঝিরিপথ এই সময় খুবই পিচ্ছিল থাকে।
  • যারা নতুন ট্রেকিং করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য বর্ষাকালে এই খুমে না যাওয়াই ভালো। 
  • দেবতাখুম বা শিলবান্ধা পাড়ায় ক্যাম্পিং করা যাবে না। 
  • যাত্রা পথের জন্য হালকা খাবার সঙ্গে রাখতে পারেন।
  • রোয়াংছড়ি বাজার থেকে বান্দরবানের শেষ বাস বিকেল পাঁচটায়। তবে সিএনজি পাবেন সব সময়। 

শেষকথা 

আশা করি ওপরের আলোচনায় বান্দরবানের দেবতাখুম (debotakhum) সম্পর্কে জানাতে পেরেছি। কোলাহলবিহীন এই পাহাড়তলীতে খুঁজে পাবেন অন্যরকম এক প্রশান্তি। যারা অ্যাডভেঞ্চার করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য বর্ষাকালে কায়াকিং অথবা শীতকালে ট্রেকিং করার জন্য উত্তম স্থান হচ্ছে দেবতাখুম (debotakhum)।

এর আশেপাশে রয়েছে ছোট-বড় ৫-৬ টি ঝরনা । ঝরনার পাশ দিয়ে বয়ে চলা ঝিরি ও পাইন্দু খাল। এই খুমের দুই দিকে প্রায় ১০০ মিটার খাড়া সিপ্পি পাহাড়। দুর্গম হলেও বেশ রহস্যময় দেবতাখুম।  আমাদের দেশের পর্যটন শিল্পকে অনেক বেশি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে এসব সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান। এসব স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব। ভ্রমণের সময় তাই যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না।

দেবতাখুম নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ’s

১. বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি কত কিলোমিটার?

উত্তর : বান্দরবান জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার

২. দেবতাখুম কি?

উত্তর : দেবতাখুমকে সকল খুমের রাজা বলা হয়।

৩. দেবতাখুম কোথায় অবস্থিত?

উত্তর :স্থানীয়রা একে “সোনাখুম” এবং “থংচিখুম” নামেও ডাকে। রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত, খুমটি প্রায় 600 ফুট লম্বা এবং স্থানীয়দের মতে, প্রায় 50-70 ফুট গভীর। 

আরও পড়ুনঃ

কুয়াকাটা ভ্রমণ : যাওয়ার উপায়, হোটেল, খরচ, প্ল্যান

লালন শাহ মাজার

মন্তব্য করুন