কক্সবাজার সৈকত
সারি সারি ঝাউবন, বালির নরম বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র। কক্সবাজার সৈকত গেলে সকালে-বিকেলে সমুদ্রতীরে বেড়াতে মন চাইবেই।
নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের নাম কক্সবাজার সৈকত। অপরূপ ও মনোমুগ্ধকর বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। যারা সপরিবারে দূরে ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্যই এই প্রতিবেদন।
আরও পরুনঃ হিমছড়ি ঝর্ণা
কক্সবাজারের আকর্ষণ
মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, মাতার বাড়ি, শাহপরী, সেন্টমার্টিন: এই স্থানগুলো কক্সবাজার সৈকতকে করেছে আরো আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন।
নদী: মাতা মুহুরী, বাঁকখালী, রেজু, কুহেলিয়অ ও নাফ নদী কক্সবাজার সৈকতের উপর দিয়ে বয়ে গেছে।
বনজসম্পদ, মৎস্য, শুটকিমাছ, শামুক, ঝিনুক ও সিলিকাসমৃদ্ধ বালু: এই জিনিসগুলোর জন্য কক্সবাজার সৈকত পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়।
সমুদ্রে স্নানের সতর্কতা
- সমুদ্রে নামার আগে জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন।
- জোয়ারের সময় সমুদ্রে গোসলে নামা নিরাপদ।
- ভাটার সময় সমুদ্রে স্নান বিপজ্জনক।
- ইয়াছির লাইফ গার্ডের সহায়তা নিন।
বিচ ফটোগ্রাফি
- কক্সবাজার সৈকতে পর্যটন মৌসুমে শ দুয়েক বিচ ফটোগ্রাফার পর্যটকদের ছবি তোলে থাকে।
- সরকারি রেট ফোরআর সাইজের প্রতিটা ছবি ৩০ টাকা।
- ছবি তোলার আগে ফটোগ্রাফারের আইডি কার্ড দেখে নিন।
স্পিডবোট ও বিচ বাইক
- স্পিডবোটে করে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত যেতে পারবেন।
- তিন চাকার বিচ বাইকে করে সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
হিমছড়ি ও ইনানী বিচ
কক্সবাজার সৈকত থেকে জিপে চড়ে হিমছড়ি ও ইনানী বিচ যেতে পারবেন। খুব সকালে গেলে দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসতে পারবেন।
কক্সবাজার সৈকত – স্মরণীয় পয়েন্টস
– সমুদ্রে স্নানের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। জোয়ার ও ভাটার সময়ে সুরক্ষিত রকমে সমুদ্রে প্রবেশ করুন।
– বিচ ফটোগ্রাফি করার সময় সরকারি রেট মেনে চলুন এবং ফটোগ্রাফারের আইডি চেক করুন।
– স্পিডবোট অথবা বিচ বাইক ব্যবহার করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং সর্বদা নিরাপদে থাকুন।
– হিমছড়ি ও ইনানী বিচে গিয়ে সকালে যেতে এবং পর্যন্ত পৌঁছার সময়ে খাবার এবং পানীয় সঙ্গে নিন।
কক্সবাজার সৈকতে অপরূপ সৌন্দর্যে ভ্রমণ করতে আপনার ভ্রমণে সমৃদ্ধ এবং সুখী কাটাতে হবে। সুস্থ ও সুন্দর ভ্রমণ করার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং কক্সবাজার সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে মজা নিন!
যাতায়াত ও ভাড়া
যারা ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যেতে চান তারা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে হবে এবং পরে সরাসরি কক্সবাজারে যেতে পারেন বা চট্টগ্রাম থেকে বাসে কক্সবাজারে যেতে পারেন।
ঢাকার ফকিরাপুল, আরামবাগ, মতিঝিল, সহ কিছু স্থানে সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যাওয়া হয়। এসি ও নন-এসি, ডিলাক্স ও সাধারণ, এসব বাসের ভাড়া পরিবহনের ভাড়া পড়বে ৪০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত।
সোহাগ, গ্রীন লাইন ছাড়াও ঈগল ও অন্যান্য পরিবহনের বাস চলাচল করে। তাছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং পরে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারে যেতে পারবেন। ঢাকার কমলাপুর থেকে প্রতিদিন ট্রেন বা বাস ছেড়ে যায়। তবে টিকেট বুকিং আগে থেকেই করে রাখা ভালো।
কক্সবাজারের আবাসিক ব্যবস্থা
বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি পর্যটন কেন্দ্র এই কক্সবাজার। দর্শনীয় এই কক্সবাজারে রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের বেশ কয়েকটি হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। এছাড়া সরকারি ও ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় বিভিন্ন মানের অনেক রিসোর্ট, হোটেল ও বোর্ডিং হাউস।
সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকায় কক্সবাজারে যাতযাপন করা যায়। হোটেল সিগালের ভাড়া ২,২০০-৭,০০০ টাকা। হোটেল শৈবালের ভাড়া ১,০০০-৩,০০০ টাকা। হোটেল লাবণীর ভাড়া ৬০০-৩,০০০ টাকা। উপলের ভাড়া ১০০০-১৫০০ টাকা। সি ক্রাউনের ভাড়া ২০০-৩,০০০ টাকা। জিয়া গেস্ট হল ৩০০-২,০০০ টাকা।
খাওয়াদাওয়া ও রেস্টুরেন্ট
প্রায় প্রতিটি আবাসিক হোটেল বা হোটেলের সন্নিকটে রেস্টুরেন্ট বা খাবারের সুযোগ রয়েছে। কক্সবাজারে ভ্রমণে গিয়ে পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ পায় সাগরের বিভিন্ন মাছের মেনু দেখে। চিংড়ি, রূপচাঁদা, লাইট্যা, ছুরি মাছ ইত্যাদি মজাদার শুটকি মাছের ভর্তায় পর্যটকদের আকর্ষণ বেশি থাকে।
খাবারের মেনু অনুযায়ী রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন ধরনের খাবারের মূল্য তালিকা পাওয়া যায়। তবে সরকার কিছু কিছু রেস্টুরেন্টে প্রতিবেশী খাবারের তালিকা নির্ধারণ করেছে।
মোটামুটি ১০-৫০০ টাকার মধ্যে ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী আপনি মজাদার খাবার চয়ন করতে পারেন। খাবার অর্ডার করার আগে খাবারের নাম, মূল্য, এবং প্রস্তুতির সময় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন। খাবারের তালিকা এবং মূল্যের সঙ্গে যুক্ত করে বিল পরিশোধ করুন।
আরও পড়ুন-
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, কক্সবাজার
ইনানী বিচ কক্সবাজার