চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের প্রকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজধানী শহর হলো চট্রগ্রাম। তাই আজ আমরা আলোচনা করবো চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান নিয়ে। চলুন দেরি না করে যেনে নেওয়া যাক,পাহাড় এবং সমুদ্র উভয়ই প্রকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হওয়ার কারনে চট্টগ্রাম কে বলা হয় প্রাচ্যের রাণী।

চট্টগ্রাম এর যেমন ঐতিহাসিক খ্যাতি এবং নামডাক রয়েছে তেমনি রয়েছে তার মনমুগ্ধকর প্রকৃতিক সৌন্দর্য। ভ্রমণ প্রেয়সী একজন ব্যাক্তিকেও দেখানো যাবে না যে কিনা চট্টগ্রাম ভ্রমণ করেননি। বাংলাদেশের মধ্য যরতগুলো ভ্রমণের স্থান রয়েছে তার মধ্যে চট্টগ্রামের ভ্রমণ পথ অনেক বেশি উন্নত হওয়াতে চট্টগ্রামে সব সময়ই দেশি বিদেশি পর্যটকদের আনা গোনা লক্ষ্য করা যায়।

চট্টগ্রামের রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। এদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি হলোঃ বোয়ালিয়া ট্রেইল, কুমিরা ঘাট, বাঁশখালি, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল,ঝরঝরি ট্রেইল, লেক ভিউ আইল্যান্ড, খেজুরতলা বীজ, কুমারীকুন্ডু, লেক ভিউ আইল্যান্ড ইত্যাদি।

আপনি যদি একজন ভ্রমনপ্রেমী ব্যাক্তি হন এবং চাচ্ছেন ভ্রমনের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম যাবেন তাহলে আপনার জন্য আজকের আর্টিকেলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলছে। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে চট্রগ্রাম ভ্রমণের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সেই সাথে উক্ত স্থানগুলো ভ্রমণের ভাড়া এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি সকল বিষয়ে খুটিনাটি তথ্য বলে দেওয়া হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি।

আরও পড়ুনঃ খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের একটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হলো পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যেটি মুলত কর্ণফুলী নদীর মোহনাতে অবস্থিত। শহরের জিরোপয়েন্ট থেকে দক্ষিণ দিকে ১৪ কিলো অতিক্রম করলেই দেখা মিলবে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত।

ঘুর্ণিঝড়ের কারণে ১৯৯১ সালে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হলেও বর্তমানে বাধ দেওয়ার পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণ করার কারণে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য আবার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের সময়ে সমুদ্রের ঢেউ চোখ জুড়িয়ে দেয়।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে যাওয়া টা অনেক সহজ কারণ এটির পাশেই অবস্থিত আন্তজার্তিক হযরত শাহ আমানত (র.) বিমানবন্দর এবং বি এন এস ঈশা খা (বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাটি)। এছাড়াও সৈকতেই পাবেন বার্মিজ মার্কেট যেখানের থেকে আপনার পছন্দ মতো কেনাকাটা করতে পারবেন।

পতেঙ্গা সৈকতের প্রস্থ খুব বেশি নয় তবে এটির সৌন্দর্য কোন অংশেই এটি আপনাকে বুঝতে দিবে না।পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতেই পাবেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে বেড়ানোর সুযোগ এবং সেই সাথে স্পিডবোড এবং অনেক কাঠের নৌকা।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

বোয়ালিয়া ট্রেইল

চট্টগ্রামের মিরসরাই এ অবস্থিত সকল ট্রেইল গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং আকর্ষনীয় ট্রেইল হলো বোয়ালিয়া ট্রেইল। চারদিকে ঘন জঙ্গলে ঘেরা, পিচ্ছিল পাথর এবং উচুনিচু পথ পাড়ি দিয়ে বোয়ালিয়া ট্রেইল দেখবেন তখন আপনি মুগ্ধ হয়ে শুধু তাকিয়ে থাকবেন। বোয়ালিয়া ট্রেইলে যাওয়ার সময়ের সকল ক্লান্তি এই মহুর্তেই উধাও হয়ে যাবে।

বোয়ালিয়া ট্রেইল দুই টি অংশে বিভক্ত। এদের মধ্যে একটি অংশে রয়েছে ট্রেইলের সবচেয়ে সুন্দর বোয়ালিয়া ঝর্ণা এবং দ্বিতীয় অংশে রয়েছে সুন্দর শুকরমারা ঝর্ণা বা পালাকাটা ঝর্ণা, সুন্দর ঝিরিপথ এবং অমরমাকিক্য ঝর্না ও নয়াতিখুম ঝর্ণা।

মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে ঝিরি পথ ধরে সামনের দিকে আগালেই পাওয়া যায় বোয়ালিয়া ঝর্ণা এবং এর থেকে অন্যান্য ঝর্ণাতে প্রবেশ করতে হলে কিছুটা পিছনে ফিরে এসে তারপরে পাহাড়ি পথ দিয়ে হেটে যেতে হবে ঝিরি পথের উদ্দেশ্যে।

তবে আপনি গাইড ছাড়া নিজে নিজে বোয়ালিয়া ট্রেইলের সবকিছু একদিনের মধ্যে দেখে শেষ করতে পারবেন। তাই বোয়ালিয়া ট্রেইলের সবকিছু উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই একজন সঙ্গী হিসেবে গাইড নিয়ে নিবেন।

কুমিরা ঘাট

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অন্যতম একটি সুন্দরতম স্থান হলো কুমিরা ঘাট যেটি সীতাকুন্ডে অবস্থিত রয়েছে। সাগরের পাশে সময় কাটানোড় জন্য অন্যতম সুন্দর জায়গা হলো কুমিরা ঘাট। এই মুলত একটি পারাপের ঘাট তবে এখানে রয়েছে একটি বিশাল ব্রিজ।

যেটিকে মনে হয়ে মাঝসমুদ্রে গিয়ে শেষ হয়েছে। যেকনো সময়ই কুমিরা ঘাট ঘুরার জন্য একটি সুন্দর জায়গা কারন এটি জোয়ার ভাটা উভয় সময়েই সুন্দর রুপ ধারণ করে। বিকেলের সময়টা কুমিরা ঘাটে ঘুরার জন্য একটা পারফেক্ট সময়।

কুমিরা ঘাটে বিজ্রের পাশাপাশি ঘুরার জন্য রয়েছে নৌকা যেটা করতে আপনি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে চাইলেই সমুদ্রের মধ্যে থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। জোয়ারের সময় গেলে আপনার কাছে মনে হবে আপনি বিজ্রের উপর দিয়ে সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হাটতেছেন।

সন্দ্বীপ যাওয়ার পথ হিসেবে বেশিরভাগ মানুষ কুমিরাঘাট কে বেছে নেয়। কুমিরাঘাট থেকে ২৫০-৩০০ টাকা ভাড়ায় স্পিডবোটের মাধ্যমে সন্দ্বীপ যাওয়া যায়। কুমিরাঘাট কে স্থানীয় মানুষেরা কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরীঘাট, ঘাটঘর ব্রিজ কুমিরা ব্রিজ এই সকল নামে বলে থাকে।

কুমিরা ঘাট চট্টগ্রাম

বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম জেলার অন্তগর্ত বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী একটি উপজেলা হলো বাঁশখালি। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট স্বচ্ছ পানির দীর্ঘ পাহাড়ি হ্রদ, চা বাগানে আবৃত সবুজের হাতছানি, সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার অনুভুতি সবগুলাই বাঁশখালিতে নিতে পারবেন।

বাঁশখালিতে ৩ লক্ষ ২৫ হাজার কেজি চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলছে এবং দর্শনার্থীর জন্য চা বাগানে প্রবেশের অনুমুতি প্রদান করা হয়েছে। কদমরসুল, খানখানাবাদ, কাথরিয়া, গন্ডামারা সহ আরো ছয়টি পয়েন্টে আছে বাঁশখালিতে।

আর এই সকল পয়েন্টে বিকেল হলেই পর্যটকের ঢল নামে। অনেকেই মনে করেন যে বাঁশখালি সমুদ্র সৈকতকেও যদি প্রচার করা হয় এবং আবাসনের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কক্সবাজারের মতো এটিও অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। বাঁশখালির আরো একটি দর্শনীয় স্থান হলো বাঁশখালি ইকো পার্ক।

বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুটিও রয়েছে বাঁশখালির এই পার্কেই। এছাড়াও হাজার বছর পুরানো বখশি হামিদ মসজিদ মলাকা বানুর মসজিদ ও দীঘী, নাপোড়া আর্গনিক ইকো ভিলেজ বাঁশখালির অন্যতম জনপ্রিয় স্থান।

আরও পড়ুনঃ ইলিশের টানে মাওয়া ফেরিঘাট ভ্রমন

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল

হরিণমারা ট্রেইল হলো মিরসরাই এর সবচেয়ে সুন্দর ট্রেইল। হরিণমারা নাম করণের একটি সুন্দর ইতিহাস রয়েছে। ঝর্ণার পানি হরিণেরা খেতে আসতো আর তখন হরিণ শিকার করা হতো জন্য এই স্থানটির নামকরন করা হয় হরিণমারা ট্রেইল। হরিণমারা ট্রেইলে পাবেন সর্পপ্রপাত, হরিণমারা ও হাটুভাঙ্গা ঝর্ণা। বাওয়াছড়ার মুখও পাবেন সর্পপ্রপাতের পাশেই এবং এই রুটে আরো পাবেন নীলাম্বর অপূর্ব লেক।

কমলকদর বাইপাসের শুরুতেই নেমে পূর্বদিকের হেটে রেললাইন পার হলেই ১০-১৫ মিনিট আরও হাটলেই অপূর্ব নীলাম্বর এর দেখা মিলবে। এরপরে আপনি চাইলে বোটে কিংবা পাহাড়ি রাস্তার যেকোনো ভাবেই সামনে যেতে পারবেন।

পাহাড় দিয়ে হাতের বাম দিকে হাটলেই দেখতে পাওয়া যাবে একটি ঝিরি আর এখান থেকেই শুরু হবে ঝিরিপথ, তবে অল্প একটু সামনের দিকে আগালেই দেখা যাবে ঝিরিপথ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। হাতের বামদিকে গেলে দেখা যাবে হরিণমারা ঝর্ণ আর ডানদিকে হাটুভাঙ্গা ঝর্ণা এবং সপপ্রপাত ঝর্ণা।

ঝরঝরি ঝর্ণা

ঝরঝরি ট্রেইল হলো সীতাকুন্ড মীরসরাই রেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এবং এডভেঞ্চারাস ট্রেইল। প্রায় দুই ঘন্টা সবুজ পাহাড়ে ঘেরা শীতল ঝিরিপথ পাড়ি দেওয়ার পরে মিলবে ঝরঝরি ট্রেইল। তবে ট্রেইল দেখা মাত্রই আপনার দুই ঘন্টার ক্লান্তি সব এক নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে। ঝরঝরি ট্রেইলের পাশে দিয়ে পাহাড় বয়ে আরো উপরে উঠলে আরো অনেক কয়েকটি ক্যাসকেড ও ঝর্ণার দেখা মিলবে যেগুলা আপনাকে অনেক বেশি মুগ্ধ করবে।

বিশেষ করে একটি ক্যাসকেড আছে যেটি সিড়ির ন্যায় ধাপে ধাপে খাজকাটা যেখানে উঠার সময় মনে হবে আপনি কোন স্বর্গীয় সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছেন। আর এই ট্রেইলের ঠিক শেষে পাবেন সবচেয়ে সুন্দরতম মুর্তি ঝর্ণা।

যারা জোক নামক প্রানীকে কম ভয় পান এবং পাহাড়ি উচু নীচু রাস্তায় চলতে খুব একটা অসুবিধা বোধ করেননা তাদের জন্য সবচেয়ে আদর্শ স্থানটি হলো সীতাকুন্ডের ঝরঝরি এবং মুর্তিঝর্ণা। ঝরঝরি ট্রেইলের প্রতি টি বাকে বাকে যে সুন্দরর্য লুকিয়ে আছে তা নিজ চোখে দেখা ছাড়া ভাষার মাধ্যমে বোঝানো অসম্ভব।

কাপ্তাই লেক রিসোর্ট

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাপ্তাই লেকের পাহাড় এবং ছোট টিলা ঘেরা পরিত্যক্ত ক্যাম্পেই গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি সেরা দর্শনীয় স্থান লেক ভিউ আইল্যান্ড। এবং পর্যটন এলাকাটি তৈরি করা হয়েছে দুইটি টিলার চার একরের অধিক এলাকা নিয়ে। এছাড়াও এখানে পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত করার জন্য বানানো হয়েছে অনেকগুলো দৃষ্টিনন্দন কটেজ এবং সেই সাথে রয়েছে হ্রদে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা।

হ্রদের মধ্যে যখন নৌকা নিয়ে ঘুরতে বের হবেন তখন দেখতে পাবেন বড় বড় ইংরেজি অক্ষরে লিখা রয়েছে LAKE VIEW ISLAND, আর পানি থেকে টিলার উপরে উঠার জন্য রয়েছে কংক্রিট দিয়ে তৈরি সিড়ি আর তার উপরেই রয়েছে চারদিকে সবুজে ঘেরা সুন্দর কটেজ। যেটার নামকরণ করা হয়েছে “রিসোর্ট কর্নফুলি” আর এই রিসোর্টে রয়েছে গ্লাস হাউসে বসে হ্রদের সৌন্দর্য দেখার ব্যবস্থা। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং নরমাল দুই রকমের থাকার ব্যবস্থাই রয়েছে।

লেক ভিউ আইল্যান্ড

কুমারীকুন্ড

চট্টগ্রাম জেলার পৌরাণিক অঞ্চল সীতাকুন্ডে অবস্থিত একটি কুপ হলো কুমারীকুন্ড। সীতাকুন্ডে অনেক বিস্ময় লুকিয়ে আছে। আর সেই বিস্ময়গুলার অন্যতম একটি বিস্ময় হলো কুমারীকুন্ড। কুমারীকুন্ড হলো প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। ধাররা করা হয় সম্ভবত প্রাচীন হিন্দুরা হট স্প্রিং এবং উষ্ণ প্রস্রবনকে অনেক পবিত্র মনে করতেন।

আর সেই হিসেবে কুমারিকুন্ড ও ছিল একটি হিন্দুদের মন্দির। সময়ের ব্যবধানে এবং যুগের ব্যবধানের কারণে মুল শহর থেকে দশকিলোমিলার দূরে পাহাড়ি দূর্গম একলায় কুমারীকুন্ডের অবস্থায় হওয়ার কারণে একটি মানুষের একটি বিস্ময়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রুপ নিয়েছে।

অনেক সরু ঝিরির এবং ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে ডালপালা ভেঙে অনেকটা পথ অতিক্রম করার পরে পাবেন পুরোনো দিনের ইটের কাঠামো যেটিও আবার মাটি চাপা পড়ে গেছে। কুমারীকুন্ড একটি কুপ যেটি আট থেকে দশ ফিট এর মতো গভীর যেটির চারদিকে পাথর দিয়ে বাধাই করা।

একদম স্বচ্ছ নীল পানি যেটার তলদেশ থেকে গ্যাসের বুদবুদ বের হচ্ছে। আর এটির চারদিকে অদ্ভুদ আকারের সব পাথর দেখেই মনে হয় অনেক পুরাতান অপরিচিত অনেক অনেক পুরাতন একটি মন্দির।

সোনাইছড়ি ট্রেইল

ডে ট্রিপের জন্য চট্রগ্রামের অন্যতম একটি সুন্দর এবং আদর্শ জায়গা হলো সানাইছড়ি ট্রেইল। যেটি চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই পাহাড় এর হাদি ফকিরহাট বাজার একাকায় অবস্থিত। এই ট্রেইলটি বারৈয়াঢোলা অভয়ারণ্যের আওতাভুক্ত হবার কারণে পুরা ট্রেইলটি পুরানো সব বুনো পাথর দিয়ে আবৃত।

সানাইছড়ি ট্রেইল পাথর দিয়ে আবৃত হওয়ার কারনে বর্ষায় মৌসুমে এখানে যাওয়া অনেকটাই কঠিন এবং এই সময়ে এখানে দূর্গমতা বেড়ে যায়। তবে এই সময়েই এখানে এডভেঞ্চার প্রেমীদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়।

বৃষ্টি এবং বর্ষার সময়ে এই ট্রেইলের পথ অনেক পিচ্ছিল হয়ে থাকে এবং সানাইছড়ি ঝর্ণা একদম ট্রেইলের শেষ মাথায়। চট্টগ্রামের এটি একটি সুন্দর ট্রেইল যেটির দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার।

এই ট্রেইলের বাদুরে কুম বা বাদুইজ্জাখুম সংকীর্ণ হলেও এটি অনেক গভীর অব্দি বৃস্তিত এটির দুপাশে ১০০ থেকে ১৫০ ফিট উচু খাড়া উচু পাথরের দেওয়াল আর উপরে গাছপালা থাকার কারনে আলোর সংকট এবং সেই সাথে অনেক বাদুর যেটি সানাইছড়ি ট্রেইলকে একটি ভুতুরে পরিবেশ বানিয়ে ফেলেছে।

আরও পড়ুনঃ পদ্মা রিসোর্ট (লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ)

বাওয়াছড়া লেক সীতাকুণ্ড

মিরসরাই এর ওয়াহেদপুর গ্রামের পাশে অবস্থিত বাওয়াছড়া লেক। ওয়াহেদপুর গ্রামের বারমাসি ছড়ার মুখে এটি অবস্থিত জন্য এটির নামকরণ করা হয় বাওয়াছড়া লেক, তবে অনেককের কাছেই নিলাম্বর লেক নামেও এটি পরিচত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দেড় কিলোমিটার পূর্বে ছোটকমলদহ বাজারের দক্ষিণপাশে বাওয়াছড়া লেকের অবস্থান।

বাওয়াছড়াতে যেতে সামান্য পথ ছাড়া সবটুকু পথ গাড়িতেই যাওয়া যায়। শেষ বিকেলের সূর্যের আলো যখন লেকে পড়ে তখন মনে হয়ে এই পুরো প্রকল্পটিই একটি পর্যটন কেন্দ্র। প্রকল্পটি পুরোটাই প্রাকৃতিক পরিবেশ দ্বারা আবৃত এবং এটিতে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার পানি।

আপনি দূরে থেকেই শুনতে পারবেন ঝর্ণার পানির শব্দ এছাড়াও সবুজ গাছ এবং অসংখ্য অতিথি পাখিদের কোলহল আপনার মন জুড়িয়ে দিবে। চাদের আলোয় ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। ঝর্ণার পানিতে পা ভিজালেই আপনার যান্ত্রিক জীবনের সকল আবসাদ ধুয়ে জীবন আবার সজীব করে তুলবে এই বাওয়াছড়া ঝর্ণা।

পরিশেষ

পর্যটকের জন্য চট্টগ্রাম জেলাটি অনেক বিখ্যাত। আর এটি বিখ্যাত হবার জন্য অনেক কারণ রয়েছে। আর চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলো ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম নগরীকে আরও বেশি সুন্দর করে তুলেছে। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি যদি এই দর্শনীয় স্থানগুলার দিকেও আরেকটু নগর দেওয়া হয় তাহলে এই নগরীটি ও বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন নগরীতে পরিনত করা যাবে।

আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে একটু বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। চট্টগ্রামে এই দশটি দর্শনীয় স্থান ছাড়াও আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে আর্টিকেলের মাধ্যমে যে দশটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো চট্টগ্রামের সবথেকে সুন্দর এবং বেশি পর্যটন কেন্দ্রিক স্থান। এই চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্য আপনার প্রিয় স্থান কোনটি সেটি অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

 

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

(১) চট্টগ্রামের পিকনিক স্পটগুলো কি কি? 

উত্তরঃ চট্টগ্রামে রয়েছে অসংখ্য পিকনিক স্পট তবে এদের মধ্যে পতেঙ্গা সমুদ্র বন্দর, বাঁশখালি ইকো পার্ক এবং লেকভিউ আইল্যান্ড সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুন্দর পিকনিক স্পট।

() চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি?

উত্তরঃ চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোড় মধ্যে রয়েছেঃ বোয়ালিয়া ট্রেইল, কুমিরা ঘাট, বাঁশখালি, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল,ঝরঝরি ট্রেইল, লেক ভিউ আইল্যান্ড, খেজুরতলা বীজ, কুমারীকুন্ডু, লেক ভিউ আইল্যান্ড ইত্যাদি।

আরও পড়ুন-

নিকলী হাওর, কিশোরগঞ্জ

মন্তব্য করুন