বাটালি হিল, ট্যুর প্ল্যান, খরচ ও ভ্রমণ তথ্য

বাটালি হিল

চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি সুন্দর পাহাড় হল বাটালি হিল। এটি শহরের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এবং স্থানীয়দের জন্য একটি প্রিয় বিনোদন কেন্দ্র।

বাটালি হিলের চূড়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। এখানে একটি টেলিভিশন টাওয়ার রয়েছে যা শহরের একটি আইকনিক ল্যান্ডমার্ক। পাহাড়ের চূড়ায় একটি মসজিদ এবং একটি মন্দিরও রয়েছে।

বাটালি হিল সারা বছর ধরে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। তবে, শীতকালে (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি) এটি বেশি জনপ্রিয় যখন আবহাওয়া মনোরম থাকে।

পাহাড়ের পাদদেশে একটি খেলার মাঠ এবং একটি শিশুদের পার্ক রয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ এবং দোকানও রয়েছে যেখানে খাবার, পানীয় এবং স্মারক জিনিসপত্র পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ কুমিরা ঘাট, চট্রগ্রাম

বাটালি হিলের দর্শনীয় স্থানসমুহ

বাটালি হিল

শহরের দৃশ্য উপভোগ করুন

বাটালি হিলের চূড়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করুন।

টেলিভিশন টাওয়ার পরিদর্শন করুন

টেলিভিশন টাওয়ারের ভেতরে ঢুকে শহরের 360-ডিগ্রি দৃশ্য দেখুন।

মসজিদ এবং মন্দির পরিদর্শন করুন

বাটালি হিলের চূড়ায় অবস্থিত মসজিদ এবং মন্দির পরিদর্শন করুন।

খেলার মাঠে খেলুন

পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত খেলার মাঠে খেলুন।

শিশুদের পার্কে ঘুরুন

শিশুদের পার্কে ঘুরে শিশুদের সাথে আনন্দ করুন।

খাবার ও পানীয় উপভোগ করুন

পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত রেস্তোরাঁয় খাবার ও পানীয় উপভোগ করুন।

স্মারক জিনিসপত্র কিনুন

পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত দোকান থেকে স্মারক জিনিসপত্র কিনুন।

যাতায়াত

বাস

চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে বাসে করে বাটালি হিলে যেতে পারবেন।

সিএনজি

সিএনজি ভাড়া করেও বাটালি হিলে যেতে পারবেন।

রিকশা

রিকশায় করেও বাটালি হিলে যেতে পারবেন।

বাটালি হিলে যাওয়ার সময়

সকাল: সকাল বেলায় বাটালি হিলে গেলে শহরের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

বিকেল: বিকেলে বাটালি হিলে গেলে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য আপনি কমলাপুর টার্মিনাল থেকে বিআরটিসি করে সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন এবং সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক, লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক এবং অন্যান্য পরিবহনের বাসে উপযুক্ত সাধারণ ভাড়াতে চট্টগ্রামে পৌঁছাতে পারেন। বাস ভাড়া ৮৫০-১১০০ টাকা পর্যন্ত।

সিলেট থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া যায় সড়ক ও রেলপথে। সিলেট থেকে চট্টগ্রামে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসে যেতে পারেন যা চট্টগ্রামে সরাসরি পৌঁছে দেয়। অতএব, সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, রাত ৯টা ২০ মিনিটে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস এবং রাত ১০টা ৩০ মিনিটে জালালাবাদ এক্সপ্রেসে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পারেন। ট্রেন ভাড়া ১৭৫ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসে বা রেলপথে ঢাকার থেকে চট্টগ্রাম, মহানগর প্রভাতী ঢাকা থেকে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ছাড়ে, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ছাড়ে, মহানগর গোধূলি ঢাকা থেকে বিকেল ৩টায় ছাড়ে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ছাড়ে, এবং তুর্ণা ঢাকা থেকে রাত ১১টায় ছাড়ে। ট্রেন ভাড়া ১৬০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত।

ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান, জিএমজি এয়ারলাইনস, ইউনাইটেড এয়ার এবং রিজেন্ট এয়ারের বিমান সরাসরি চট্টগ্রামে পৌঁছাতে সাহায্য করে।

কোথায় থাকবেন

আপনার বাজেট এবং পছন্দ অনুযায়ী চট্টগ্রামে বিভিন্ন ধরণের হোটেল আছে। নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলের নাম, ঠিকানা এবং ভাড়ার তালিকা দেওয়া হলো:

১. হোটেল প্যারামাউন্ট

ঠিকানা: স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম (নতুন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে)

সুবিধা

বাজেটে সেরা হোটেল

সুন্দর লোকেশন

প্রশস্ত করিডোর

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রুম

ভাড়া

নন এসি সিঙ্গেল: ৮০০ টাকা

নন এসি ডাবল: ১৩০০ টাকা

এসি সিঙ্গেল: ১৪০০ টাকা

এসি ডাবল: ১৮০০ টাকা

বুকিং – ফোন: ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪

২. হোটেল এশিয়ান এসআর

ঠিকানা: স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম

সুবিধা

ছিমছাম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হোটেল

ভাড়া

নন এসি সিঙ্গেল: ১০০০ টাকা

এসি সিঙ্গেল: ১৭২৫ টাকা

বুকিং- ফোন: ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫

৩. হোটেল সাফিনা

ঠিকানা: এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম

সুবিধা

পারিবারিক পরিবেশ

ছাদের ওপর সুন্দর রেস্টুরেন্ট

ভাড়া

নন এসি: ৭০০ টাকা থেকে শুরু

এসি: ১৩০০ টাকা

বুকিং: ফোন: ০৩১-০৬১৪০০৪

৪. হোটেল নাবা ইন

ঠিকানা: রোড ৫, প্লট-৬০, ও.আর. নিজাম রোড, চট্টগ্রাম

সুবিধা

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা

নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় অবস্থিত

ভাড়া:

এসি: ২৫০০/৩০০০ টাকা

বুকিং: ফোন: ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২

৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক

ঠিকানা: ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

সুবিধা

আগ্রাবাদে থাকার জন্য ভালো হোটেল

ভাড়া

এসি: ২৩০০/৩৪০০ টাকা

বুকিং: ফোন: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭

এছাড়াও, আপনি অনলাইনে হোটেল বুকিং ওয়েবসাইট যেমন:

  • Booking.com
  • Agoda.com
  • Trivago.com
  • TripAdvisor.com

কোথায় খাবেন

চট্টগ্রাম তার ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য বিখ্যাত। হোটেল জামান তাদের বিরিয়ানি এবং কাবাবের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। মেজবানির জন্য চকবাজারে অবস্থিত “মেজবান হাইলে আইয়্যুন” রেস্তোরাঁ অতুলনীয়। তাদের বিশেষ খাবার হলো তেহারি।

চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন মানের অসংখ্য রেস্টুরেন্ট আছে। এদের মধ্যে বারকোড ক্যাফে, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, গল্ফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোস্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি অন্যতম।

এই রেস্টুরেন্টগুলোতে বিভিন্ন ধরণের খাবার পাওয়া যায়, যেমন বাংলা, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, কন্টিনেন্টাল ইত্যাদি। আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনি যেকোনো রেস্টুরেন্টে যেতে পারেন।

এখানে চট্টগ্রামের আরও কিছু জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের তালিকা দেওয়া হল:

  • হোটেল ওয়ান
  • হোটেল শাহী
  • হোটেল সিলভার স্পুন
  • রেস্তোরাঁ নূর
  • রেস্তোরাঁ আল-হাফিজ
  • রেস্তোরাঁ কাবাব
  • রেস্তোরাঁ তেহারি
  • রেস্তোরাঁ বিরিয়ানি

আপনার সুবিধার্থে, চট্টগ্রামের কিছু বিখ্যাত খাবার ও রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে আরও তথ্য দেওয়া হল:

ঐতিহ্যবাহী খাবার

  • মেজবানি: চট্টগ্রামের সবচেয়ে বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী খাবার। এটি বিভিন্ন ধরণের মাংস, ভাত, ডাল, তরকারী এবং মশলা দিয়ে তৈরি।
  • কাচ্চি বিরিয়ানি: চট্টগ্রামের আরেকটি বিখ্যাত খাবার। এটি গরুর মাংস, ভাত, পেঁয়াজ, আদা, রসুন এবং মশলা দিয়ে তৈরি।
  • তেহারি: মসুর ডাল, ভাত, মাংস এবং মশলা দিয়ে তৈরি।
  • চট্টগ্রামীয় ইলিশ: চট্টগ্রামের ইলিশ মাছ বিশ্ব বিখ্যাত। এটি বিভিন্নভাবে রান্না করা হয়।

জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট

  • হোটেল জামান: বিরিয়ানি এবং কাবাবের জন্য বিখ্যাত।
  • মেজবান হাইলে আইয়্যুন: মেজবানির জন্য বিখ্যাত।
  • বারকোড ক্যাফে: আধুনিক পরিবেশে বিভিন্ন ধরণের খাবার পরিবেশন করে।
  • গ্রিডি গাটস: বারবিকিউ এবং গ্রিলড খাবারের জন্য বিখ্যাত।
  • ক্যাফে ৮৮: চাইনিজ এবং থাই খাবারের জন্য বিখ্যাত।
  • সেভেন ডেইজ: বিভিন্ন ধরণের বাংলা খাবার পরিবেশন করে।
  • ধাবা: ভারতীয় খাবারের জন্য বিখ্যাত।

আপনার ভ্রমণ উপভোগ করুন!

আরও পড়ুন-

পালকি চর সমুদ্র সৈকত

মহামায়া লেক, চট্টগ্রাম

মন্তব্য করুন