বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর
মহাকাশ আসলে দেখতে কেমন? মহাকাশের নক্ষত্রগুলো তো পৃথিবী থেকে দেখতে অনেক উজ্জ্বল লাগে। কিন্তু সামনাসামনি দেখতে এগুলো ঠিক কতটা জ্বলন্ত? এরকম অনেক কৌতুহলই আমাদের অনেকের মনেই কাজ করে। তাই সে সকল কৌতুহল মানুষের জন্যই বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর।
কারন একমাত্র এখানে আসলেই আপনার সব কৌতুহল এক নিমিষেই মিটে যাবে। অজানাকে জানার নেশা মানুষের চিরন্তন আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকে। আর সেটা যদি হয় উঠে বিনোদনের মাধ্যমে তবে তো কথাই নেই।
সুবিশাল অজানাকে জানানোর সুযোগের পাশাপাশি মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতেই রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণীর মোড়ে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (bangabandhu military museum)।
যেখানে গেলে আপনার অজানাকে জানার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের বলব সামরিক জাদুঘর (military museum) সম্পর্কে অনেক অনেক তথ্য। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।
আরও পড়ুনঃ পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি
নভোথিয়েটার
আমাদের অনেকের হয়ত জানতে চান নভোথিয়েটার কী? নভোথিয়েটার বলতে সাধারণত একটা জায়গাকে বোঝায়, যেখানে কিছু বিশেষ যন্ত্রপাতি থাকে, আর সেই যন্ত্রপাতির সাহায্যে কৃত্রিমভাবে আকাশকে দেখানো হয়। এই নভোথিয়েটার মূলত জ্যোতির্বিজ্ঞান ও নাবিকদের শিক্ষা দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এটা দেখে বেশ মজা পায়।
১৯২৩ সালের দিকে পূর্ব জার্মানির জেনার “জিস অপটিক্যাল কোম্পানির” ওয়ালজার বায়ারস ফ্রেন্ড’ নামের এক ব্যক্তি প্রথম এই নভোথিয়েটার তৈরি করেন। তার যন্ত্রটি গোল গম্বুজাকার একটি ঘরের মধ্যে রাখা ছিল। এবং এই যন্ত্রটি আসল আকাশের চেহারাকে তুলে ধরতে পারত।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকার বিজয় সরণী এলাকায় ৫.৪৬ একর জমির উপর ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের একমাত্র প্ল্যানিটেরিয়াম ‘‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার ’’ (Novotheatre) যা মাওলানা ভাসানী নভোথিয়েটার নামেও পরিচিত।
বিনোদনমূলক শিক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে জনসাধারণের মনে ইতিবাচক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজ হতে কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস দূরীকরণ এবং তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করে গড়ে তোলাই এই নভোথিয়েটারের উদ্দেশ্য। নভোথিয়েটারটি উদ্বোধন করা হয় ২০০৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ১৩০ কোটি টাকা।
নভোথিয়েটারের কেন্দ্রে ১৫০ টি প্রজেক্টর ব্যবহার করে মাল্টিপল ইমেজের সমন্বয়ে একটি কৃত্রিম মহাকাশ তৈরি করা হয়েছে। নভোথিয়েটারে ৫ টি লেভেল রয়েছে। এর মধ্যে মাটির উপরে দুইটি লেভেল এবং নিচে ৩টি লেভেল । ভবনটির দুটি ভূগর্ভস্থ ফ্লোরে দেশবিদেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত রয়েছে।
কোথায় অবস্থিত
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (bangabandhu military museum) রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণীর মোড়েই অবস্থিত। আসল লোকেশনটাই হলো ঢাকার তেজগাঁওয়ে। তাই কৃত্রিম মহাকাশ উপভোগ করতে হলে আপনাকে আসতে হবে ঢাকার তেজগাঁওয়ের বিজয় স্মরণী মোড়ে।
এ ছারাও নভোথিয়েটার দেখার পাশাপাশি আপনি চাইলে আর কিছু স্থান ভ্রমন করতে পারেন যেমনঃ জাতীয় সংসদ ভবন, ঐতিহাসিক কার্জন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আশা করি, এই সকল স্থান ভ্রমন করলে আপনার অনেক ভাল লাগবে। তার পাশাপাশি অনেক কিছু জানতে অ শিখতে পারবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার
এই বিশ্ব জুড়েই আছে বিস্ময়, আছে এক অবাধ রহস্য!
প্রিয় পাঠক আপনি কি পৃথিবীতে বসেই দূর মহাকাশের নক্ষত্রলোক ঘুরে আসতে চান? খুব কাছে থেকেই কি দেখতে চান দূর মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রদের মুগ্ধকর মিলনমেলা? তাহলে আর দেরি না করে আজই চলে আসুন ঢাকার বিজয় সরণিতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে। প্রযুক্তির কল্যাণে মহাকাশে অবস্থান এর মত প্রায় একই অনুভূতি আপনি লাভ করতে পারবেন এখানে আসলে।
বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর অধীনে ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে। দেশের একমাত্র প্লানেটোরিয়াম নভোথিয়েটার। এ প্রকল্পটি শুরু হয় যুদ্ধের পর ১৯৯৭ সালে। এবং তা সম্পন্ন হওয়ার এর কার্যক্রম চালু করা হয় ২০০৪ সালে। এবং এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত থেকে উন্নতমানের আধুনিক সরঞ্জাম আনা হয়েছে। যেগুলো প্রদর্শনীর কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বিনোদনের মাধ্যমে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মহাকাশবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস দূর করে বিজ্ঞানশিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করাই হলো বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের মূল উদ্দেশ্য।
কিভাবে যাবেন
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (bangabandhu military museum) যেহেতু বাংলাদেশের অবস্থিত, তাই নভোথিয়েটারের সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর সব শো প্রদর্শন করতে আসতে চাইলে আপনাদেরকে সর্বপ্রথম ঢাকায় আসতে হবে। আপনারা চাইলে আপনাদের নিজ জেলা থেকে বাস, লঞ্চ কিংবা ট্রেনে করে ঢাকায় আসতে পারবেন।
এরপর ঢাকা শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে সিএনজি, বাস, ট্যক্সি করে ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণি মোড়ে (military museum location) যাওয়া যাবে। অথবা কেউ চাইলে যে কোন উপায়ে ফার্মগেট অথবা জিয়া উদ্যানের সামনে গিয়েও পায়ে হেঁটে নভোথিয়েটারে আসতে পারবেন।
নভোথিয়েটা এর সময়সূচী
বিভিন্ন শো প্রদর্শনীর সময় শনি – মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার বার সকাল ১১.০০ টা, দুপুর ১.০০ টা, বিকাল ৩.০০ টা, বিকেল ৫.০০ টা এবং সন্ধ্যা ৭.০০ টায় শুরু হবে। প্রদর্শনীর সময় শুক্রবার দিন সকাল ১১.৩০ টা বিকাল ৩.০০ টা, বিকেল ৫.০০ টা, সন্ধ্যা ৭.০০ টার দিকে শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান
টিকিট মূল্য
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর আপনি যদি শুধু মূল চত্বরে প্রবেশ করতে চান তাহলে ফি দিতে হবে ১০ টাকা। তবে আপনি যদি প্লানেটোরিয়াম শো বা রাইড সিমুলেটরের শো দেখতে চান তবে তার জন্য টিকিট সংগ্রহ (bangabandhu military museum ticket price) করতে হবে, তাহলে তার জন্য আলাদা করে প্রবেশ টিকিটের প্রয়োজন হবে না। প্লানেটোরিয়াম শো এর জন্যই জনপ্রতি টিকিটমূল্য ধরা হয় ৫০ টাকা। আর প্রতিদিন এখানে সর্বমোট পাঁচবার প্রদর্শনী চলে।
এই প্রদর্শনী গুলো দেখানোর আগেই কাউন্টার থেকে টিকেট বিক্রি শুরু করা হয়। তবে আপনি যদি সামনের সিট এ বসে শো উপভোগ করতে চান অথবা, লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা ছাড়াই টিকেট নিতে চান কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক টিকেট নিতে চান তবে পরিচালক বরাবর আবেদন করা সাপেক্ষে অগ্রিম টিকেট বরাদ্দেরও সুব্যবস্থা আছে।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর সময়সূচি
সাধারণত সপ্তাহে প্রতিদিনই নভোথিয়েটার খোলা থাকে। তবে নভোথিয়েটার সাপ্তাহিক বন্ধ (military museum off day) থাকে বুধবার। তবে শুক্রবার ও এটি খোলা থাকে। এবং বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে সরকারি যে ছুটিগুলো থাকে, এই ছুটির দিনগুলোতেও নভোথিয়েটার বন্ধ থাকে।
নভোথিয়েটার শো টাইম
অনেকেই জানতে চান নভোথিয়েটারে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রতিটি শো কত মিনিট ব্যাপী হয়? আসলে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের অথবা ১০ মিনিট পর পর শুরু হয়।
নভোথিয়েটারের শো এর সময়সূচী গুলো হলো:-
- সকাল ১০ঃ৩০
- দুপুর ১২ঃ০০
- দুপুর ২ঃ০০
- বিকেল ৩ঃ৩০
- বিকেল ৫ঃ০০
- সন্ধ্যা ৬ঃ৩০
শুক্রবার দিন
- সকাল ১০ঃ০০
- সকাল ১১ঃ৩০
- দুপুর ২ঃ৩০
- বিকেল ৪ঃ০০
- বিকেল ৫ঃ৩০ এবং
- সন্ধ্যা ৭ঃ০০
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর কি কি আছে
২০০৪ সালে চালু হওয়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকার বিজয় সরণী এলাকার ৫.৪৬ একর জমি জুড়ে ১২৩ কোটি অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের একমাত্র প্ল্যানিটেরিয়াম ‘‘বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর’’। যা কিনা লোকমুখে মাওলানা ভাসানী নভোথিয়েটার নামেও বেশ সুপরিচিত।
নভোথিয়েটারের উদ্দেশ্যই হলো বিনোদনমূলক শিক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে জনসাধারণের মনে ইতিবাচক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা এবং এর মাধ্যমে সমাজ থেকে কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস দূরীকরণ এবং পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করে গড়ে তোলা।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরটি (bangabandhu military museum) উদ্বোধন করা হয় ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে। এটি নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছিল প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। নভোথিয়েটারের কেন্দ্রে আছে একটি কৃত্রিম মহাকাশ। যা কিনা ১৫০ টি প্রজেক্টর ব্যবহার করে মাল্টিপল ইমেজের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
তাছাড়াও নভোথিয়েটারে আছে ৫ টি লেভেল। এর মধ্যে মাটির উপরে রয়েছে দুইটি লেভেল এবং নিচে আছে ৩টি লেভেল। ভবনটির দুটি ভূগর্ভস্থ ফ্লোরেই আছে দেশ বিদেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের অনেক চমৎকার ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত রয়েছে।
বিজ্ঞান সহায়ক এই নভোথিয়েটারটিতে সম্পূর্ণ বিনোদনের মাধ্যমে মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করে তোলার জন্য প্রদর্শিত হচ্ছে বিভিন্ন রকম বিস্ময়কর ছবি। এখানে আছে মনে রাখার মতো প্যানো – হেমিসফারিক প্রক্ষেপণ যন্ত্র যার সাহায্যে দেখানো হচ্ছে প্লানেট শো, এবং জার্নি টু ইনফিনিটি। যা ড. বিল গুস এর অসাধারণ এক সৃষ্টি।
এই ছবিতে জিএসএস হেলিয়স এবং অ্যাস্ট্রোভিশন – ৭০ যৌথভাবে দর্শকদের নিয়ে যায় পুরোপুরি এক ভিন্ন জগতে। তাছাড়া অনন্য সেই যাত্রাপথে আবার বিস্ময়কর শব্দ ও ছবির সম্মিলন ঘটে। যার অনুভূতি মহাকাশে অবস্থান এর মতই।
উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রক্ষেপণ যন্ত্রের অনিন্দ্যসুন্দর বর্ণিল আলোকচ্ছটা, অ্যাস্ট্রোভিশন ছবি এবং স্কাইক্যান ভিডিও আপনাকে পৌঁছে দিবে একেবারে সৌরমন্ডলে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি পথে। সেখান থেকে দেখতে পারবে মহাকাশের বিস্তৃত সীমা। আরবার একেবারে কাছ থেকেই দেখতে পারবেন তারার মৃত্যু এবং।
যেগুলোর কোনো–কোনোটির কৃষ্ণগহ্বরে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য একেবারে অতুলনীয়। তাছাড়া দেখতে পারবেন সূর্যের বুকে আগুনের মহাসাগর। সূর্যের প্রচন্ড তাপদাহে দগ্ধ ক্ষতবিক্ষত বুধগ্রহের সব অবয়ব। দেখা যাবে শনির বলয় কিংবা গ্রহরাজ বৃহস্পতিকে।
সামরিক জাদুঘর যা যা দেখতে পারবেন
নভোথিয়েটারের ভিতরের অংশটি বেশ চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর। যা আপনাকে এক অন্য রাজ্যে হারিয়ে যেতে সাহায্য করবে। নভোথিয়েটারে যা যা দেখতে পারবেন নিচে তা উল্লেখ করা হল:-
প্রদর্শনী
নভোথিয়েটারে প্রতিদিনই দুটি করে ফিল্ম প্রদর্শিত হয়। একটি হলো মহাকাশবিষয়ক শো ‘জার্নি টু ইনফিনিটি’, আপনি যদি নভোথিয়েটারে যান তাহলে ‘জার্নি টু ইনফিনিটি’ এই শোতে দেখতে পারবেন মহাকাশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যচিত্র। এটি নির্মাতে হলো আমেরিকান ডকুফিল্ম নির্মাতা ড. বিল গুস। এই তথ্যচিত্রটি এখানকার উচ্চক্ষমতার প্রক্ষেপণযন্ত্রের অনিন্দ্য-সুন্দর আলোচ্ছটায় দর্শকদের যেন পৌঁছে দেয় গ্রহ থেকে আরেক গ্রহান্তরে, মিল্কিওয়ে ও মহাকাশ এর গ্যালাক্সিতে।
এটি সামনাসামনি উপভোগ করলে মনেই হবে না যে, আপনি কোন ফিল্মে দেখছেন। বরং আপনার কাছে মনে হবে আপনিও এ বিশাল মহাশূন্যের মধ্যেই যেন ভাসছেন। আপনার কাছে মনে হবে বিস্ময় জাগানো রহস্যময় বিগব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই সৌরজগতের সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার সাথে কোনো না কোনোভাবে আপনার সম্পর্ক আছে।
বৃহৎ ও স্পষ্টভাবে এই ফিল্মে আপনি যা যা দেখতে পারবেন:- চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ, উল্কাপাত; বিভিন্ন দেশের বছরের বিভিন্ন সময়ের রাতের আকাশ এর দৃশ্যপট, দূর অতীত, বর্তমান ও দূর ভবিষ্যতের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান ও বিচরণ কেমন হবে, পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহের সব পৃষ্ঠদেশ, সূর্যের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া-বিক্রিয়ার দৃশ্য, নক্ষত্রমণ্ডলির বাহ্যিক ত্বক, তাছাড়াও দেখবেন নক্ষত্রের মৃত্যু এবং সর্বগ্রাসী কৃষ্ণ গহবরে এদের কোনো কোনোটির হারিয়ে যাওয়ার চরম দৃশ্য।
এবং আরও দেখতে পারবেন বিগ ব্যাং অথবা মহাবিস্ফোরণ। মানে মূল কথা হলো এই প্রদর্শনী দেখলে আপনি মহাকাশ এর যা আছে সব উপভোগ করতে পারবেন। আর এটি দেখার পাশাপাশি সিম্যুলেশন ইফেক্টের কারণে দর্শকদের কাছে মনে হবে ঘটনাস্থলে সশরীরে যেন হাজির আছেন তারা। আর এ যেন এক অনির্বচণীয় অনুভূতি।
অপর যে ফিল্মটি আছে সেখানে দেখতে পারবেন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির এক অপরুপ প্রতিফলন। আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলে কাজ করা যে মানবিকতা, সাম্য, গণতন্ত্র আর অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা আছে, তার কথা বর্ণিত আছে এই ফিল্মটিতে। এটি ধারাবিবরণী, পরিচালনা, চিত্রনাট্য তৈরী করেছেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।
আরও পড়ুনঃ সাজেক ভ্যালি – যাতায়াত, থাকা, খাওয়া খরচ সহ সকল তথ্য
ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটর
আপনি যদি এদেশ থেকেই মিশর ভ্রমণ করতে চান তবে ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটরই বেস্ট চয়েজ। কারন এটি এমন একটি রোলার কোস্টার, যেখানে প্রাচীন পিরামিডের মধ্য দিয়ে সময়ের দরোজাকে পেরিয়ে মিশর ভ্রমণের অনুভূতি লাভ করা যায়। ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটরে আসন সংখ্যা মূলত আছে ৩০ টি। আর জনপ্রতি এর টিকিটের মূল্য হবে ২০ টাকা।
অন্যান্য বেশ কিছু সায়েন্টিফিক প্রদর্শন
এই নভোথিয়েটারে আরো রয়েছে সুন্দর প্রদর্শনযোগ্য বিচিত্র সায়েন্টিফিক সব বিষয়। এর বেশিরভাগই হলো গ্রহ-নক্ষত্র-ছায়াপথ সংক্রান্ত প্রদর্শনী। যেমন আছে:-সৌরজগতের গ্রহসমূহের সব মডেল’, মহাকাশ বিষয়ক সকল তথ্যচিত্র; সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদের মডেলসহ নানান কিছু।
তাছাড়াও আছে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য একটি অত্যাধুনিক টাচস্ক্রিন কম্পিউটার,যেটির মধ্যে আঙুল ছোঁয়ানো মাত্রই পেয়ে যাবেন বিজ্ঞানভিত্তিক যাবতীয় সব তথ্য।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর টিকেট
জাদুঘরে প্রবেশ করতে জনপ্রতি টিকেট মূল্য ১০০ টাকা। ৫ বছর বা তার ছোট বাচ্চাদের প্রবেশে কোন টিকেট এর প্রয়োজন হয় না। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশ গুলোর দর্শনার্থীদের প্রবেশ টিকেট ৩০০ টাকা এবং অন্যান্য বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্যে প্রবেশ ফি ৫০০ টাকা। টিকেট পাওয়া যাবে অনলাইনেও।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর সময়সূচি
সকালের প্রদর্শনী: সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা (বুধবার ও শুক্রবার বাদে)
বিকেলের প্রদর্শনী: বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা (বুধবার বাদে)
সাপ্তাহিক বন্ধ: বুধবার, এছাড়া যে কোন জাতীয় ছুটির দিন গুলোতে জাদুঘর বন্ধ থাকে।
নভোথিয়েটারের বাইরে কি আছে
নভোথিয়েটারের ভিতরের পরিবেশ যেমন সুন্দর, ঠিক তেমনি বাইরের পরিবেশও অনেক সুন্দর। নভোথিয়েটারে রয়েছে ১৫০টি আসনের অডিটোরিয়াম, ৫০ আসনের একটি ফ্রেস কনফারেন্স রুম, গাড়ি পার্কিং ও অনেক খোলামেলা খালি জায়গা, যার জন্যও সরকারকে নির্ধারিত হারে ভাড়া দেয়া হয়।
আমি বলব, দু’বছরের কম বয়সী শিশু এবং বিশেষ অসুস্থ ব্যক্তিদের নভোথিয়েটারের প্রদর্শনী উপভোগ না করাই ভালো হবে। তাছাড়া নভোথিয়েটারের মূল ভবনে প্রবেশের আগে আছে আছে একটি ছোট্ট জলাশয়, যা বেশ সুন্দর।
সেখানে বিচিত্র রকমের মাছকে সাঁতরে বেড়াতে দেখা যায়। আপনি যদি মাছ ভালোবাসেন তবে চাইলে ওই সব মাছকেও আপনু বেশ কিছুটা খাবার দিয়ে আসতে পারেন। এবং মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করতে পারেন তাদের খাবার গ্রহণের সেই শৈল্পিক ও নান্দনিক দৃশ্যও।
শেষ কথা
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (bangladesh military museum) হলো এমন একটি দর্শনীয় স্থান যেখানে আসলে আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়বেই। বিশ্বাস করুন, এই পৃথিবীর বাইরে ঠিক কি কি রয়েছে, দূর ওই মহাকাশ দেখতে ঠিক কেমন, বিজ্ঞানের সব কলা কৌশল সবকিছুই জানতে পারবেন আপনি একমাত্র এই নভোথিয়েটারে আসলে।
বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের একবার হলেও বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর দর্শন করা উচিত। কারণ এখানে আসলে আপনি জানতে পারবে বিজ্ঞানের সব নানা আবিষ্কারের তথ্য, উপভোগ করতে পারবে মহাকাশের কৃত্রিম সব দৃশ্য।বাংলাদেশের অন্যতম স্থাপনা গুলোর মধ্যে এই নভোথিয়েটার এক কথায় সত্যিই অসাধারণ ও অত্যন্ত কার্যকরী এবং যুগোপযোগী স্থাপনা।
তাই নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে, মহাকাশ ও মহা জগৎ নিয়ে সকল কৌতুহল দূর করতে সপরিবারে চলে আসুন এই নভোথিয়েটারে। কারন ব্যস্ত জীবন ছেড়ে সবারই প্রয়োজন একটুখানি বিনোদনের। আর সেই বিনোদন নভোথিয়েটার এর সাথে উপভোগ করার বিকল্প নেই।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর টিকিট?
উত্তর: জাদুঘরে প্রবেশ করতে জনপ্রতি টিকেট মূল্য ১০০ টাকা। ৫ বছর বা তার ছোট বাচ্চাদের প্রবেশে কোন টিকেট এর প্রয়োজন হয় না। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশ গুলোর দর্শনার্থীদের প্রবেশ টিকেট ৩০০ টাকা এবং অন্যান্য বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্যে প্রবেশ ফি ৫০০ টাকা।
প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর কোথায়?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (bangabandhu military museum) রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণীর মোড়েই অবস্থিত।
প্রশ্ন: নভোথিয়েটারে কি কি আছে?
উত্তর:- এক কথায় মহাকাশ এর সম্পূর্ণ গঠন কৃত্রিমভাবে উপস্থাপন করা আছে নভোথিয়েটারে। পাশাপাশি আছে বিজ্ঞানের সকল তথ্যের ভান্ডার।
প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর সময়সূচি?
উত্তর: সকালের প্রদর্শনী: সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা (বুধবার ও শুক্রবার বাদে)
বিকেলের প্রদর্শনী: বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা (বুধবার বাদে)
প্রশ্ন: সামরিক জাদুঘর কবে খোলা?
উত্তর:- ঢাকায় বিজয় স্বরণিস্থ বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (military museum dhaka), সপ্তাহে বুধবার ও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে, এছাড়াও শুক্রবারে খোলা থাকে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন-
মানিকগঞ্জ দর্শনীয় স্থান
সাইরু হিল রিসোর্ট, বান্দরবান