জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, ভ্রমণ গাইড তথ্যসমূহ

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর

বাংলাদেশের জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর সংস্কৃতির এক অমূল্য ভাণ্ডার। চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর দেশের একমাত্র জাদুঘর যা বিভিন্ন জাতি ও জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং জীবনধারা তুলে ধরে।

১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরটিতে বাংলাদেশের আদিবাসী ও অ-আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নিদর্শন প্রদর্শিত হয়।

জাদুঘরটিতে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীদের চোখে পড়ে কেন্দ্রীয় হলঘরের বিশাল মানচিত্র, যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বাসস্থান চিহ্নিত করা আছে।

এরপরে চারটি গ্যালারিতে বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে তাদের পোশাক, অলংকার, অস্ত্র, বাদ্যযন্ত্র, কৃষি ও শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি রাখা আছে।

নৃতাত্ত্বিক জিনিসপত্র ছাড়াও জাদুঘরে একটি গ্রন্থাগার ও সুন্দর গুছানো বাগান রয়েছে। জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০ টাকা। জাদুঘরটি প্রতি সপ্তাহের রবিবার এবং সকল সরকারী ছুটির দিনে বন্ধ থাকে।

আরও পড়ুনঃ শ্রীমঙ্গল রিসোর্ট

জাদুঘরের প্রদর্শনী

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর jati tattik jadu ghor
জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর এর প্রদর্শনী বিভাগ কে ৪ টি গ্যালারিতে ভাগ করা হয়েছে।

প্রথম গ্যালারি

এই গ্যালারিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনধারা তুলে ধরা হয়েছে।

দ্বিতীয় গ্যালারি

এখানে বাংলাদেশের অ-আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নিদর্শন প্রদর্শিত হয়।

তৃতীয় গ্যালারি

এই গ্যালারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নিদর্শন প্রদর্শিত হয়।

চতুর্থ গ্যালারি

এখানে জাদুঘরের সংগ্রহশালা থেকে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রদর্শিত হয়।

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের গুরুত্ব

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর এ কিছু গুরুত্ব রয়েছে-

সংস্কৃতির সংরক্ষণ

জাদুঘরটি বিভিন্ন জাতি ও জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে।

গবেষণা

জাদুঘরটি গবেষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার।

শিক্ষা

জাদুঘরটি শিক্ষার্থীদের জন্য জীবন্ত পাঠ্যবই।

সচেতনতা বৃদ্ধি

জাদুঘরটি বিভিন্ন জাতি ও জনগোষ্ঠীর সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

সম্প্রীতি ও ঐক্য

জাদুঘরটি বিভিন্ন জাতি ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের সমস্যা

  • অপ্রতুল তহবিল: জাদুঘরটির উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের অভাব রয়েছে।
  • প্রদর্শনীর আধুনিকায়ন: জাদুঘরের প্রদর্শনীর আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
  • প্রচারণার অভাব: জাদুঘরটি সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে পর্যাপ্ত প্রচারণা নেই।

যাতায়াত

চট্টগ্রাম শহরের যেকোন স্থান থেকে বাস, সিএনজি ও রিকশা চালিয়ে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরে যেতে পারবেন।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম

ঢাকাস্থ সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, ইউনিক, টিআর ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, সোহাগ, এস. আলম, মডার্ন লাইন ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহনের এসি-নন/এসি বাসে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়।

আর ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন হতে পর্যটক এক্সপ্রেস, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তৃর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্টগ্রাম মেইলে যাত্রা করতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রাম শহরের ষ্টেশন রোড, জিইসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল স্টার পার্ক, হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, হোটেল মিসখা, হোটেল হিলটন সিটি, এশিয়ান এসআর হোটেল, হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল সাফিনা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

কোথায় খাবেন

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য হোটেল জামানের বেশ সুনাম রয়েছে। আর মেজবানি খাবারের জন্য চকবাজারের মেজবান হাইলে আইয়্যুন রেস্তোরাঁ প্রসিদ্ধ। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে অসংখ্য ভালমানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ছড়িয়ে আছে।

এদের মধ্যে বারকোড ক্যাফে, ক্যাফে ৮৮, গ্রিডি গার্টস, সেভেন ডেইজ, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট প্রভৃতি অন্যতম।

আরও পড়ুন –

চেরাগী পাহাড় চট্টগ্রাম

বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত 

মন্তব্য করুন