ফয়েজ লেক – চট্টগ্রাম

ফয়েজ লেক

ছুটির দিনে কোথায় ঘুরতে যাবেন ভাবছেন? অনেকেই আবার ছুটি কাটানোর জন্য দেশের বাহিরে চলে যান। কিন্তু আমাদের দেশেও যে দেখা এবং থাকার মত অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানি না। আজকে তেমনি এক মন জুড়ানো জায়গা নিয়ে আলোচনা করব।

আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব চট্টগ্রাম জেলার ফয়েজ লেক সম্পর্কে। ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) একটি কৃত্রিম লেক যা তৈরি করা হয়েছিল ১৯২৪ সালে। পাহাড়ের এক উঁচু জায়গা থেকে অন্য উঁচু জায়গার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণ করার মাধ্যমে এই লেক সৃষ্টি করা হয়।

এখানে গেলে যেমন লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে, তেমনি অ্যাডভেঞ্চার করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু রাইড। শিশুদের জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। সবমিলিয়ে যারা ভ্রমন করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য একটি উত্তম জায়গা হচ্ছে ফয়েজ লেক।

আরও পড়ুনঃ নেপাল ভ্রমন | নেপাল ভ্রমণ খরচ ও ভ্রমন গাইড

Table of Contents

ফয়েজ লেক – অবস্থান  

চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী রেলস্টেশনের অদূরে খুলশি এলাকায় অবস্থিত ফয়েজ লেক (Foy’s Lake)। এই লেক / হ্রদ কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে ১৯২৪ সালে। ৩৩৬ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত কৃত্রিম এই হ্রদটি চট্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। 

পাহাড়তলী রেলস্টেশনের দক্ষিণ কোল ঘেঁষে রয়েছে আরেকটি কৃত্রিম লেকফয়েজ লেক তৈরি করার পূর্বে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই লেকটি খনন করে ১৯২০ সালে। দুটি কৃত্রিম লেক বর্তমানে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় । চট্টগ্রাম শহরের ব্যাপক এলাকা জুড়ে বিশেষ করে নিকটবর্তী রেলওয়ে কলোনিতে পানি সরবরাহ করার জন্য খনন করা হয়েছিল এই দুটি জলাধার। 

ছোট বড় পাহাড়ে ঘেরা ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) এর কাছে রয়েছে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় “বাটালি হিল”। এছাড়াও গোধূলি, অরুণাময়ী, মন্দাকিনী, আকাশমনি, অলকানন্দা এবং দক্ষিণী নামের লেক রয়েছে সেখানে। লেকগুলোকে ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো উঁচু উঁচু পাহাড়। যেমন – আসমানী, গগনদীপ, জলটুঙ্গী ইত্যাদি।  

ফয়েজ লেক – ইতিহাস 

১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেল কলোনিতে বসবাসকারী মানুষদের কাছে পানি সরবরাহ করার জন্য ফয়েজ লেক নির্মাণ করা হয়েছিল। লেকটি সৃষ্টি করা হয় পাহাড়ের এক উঁচু জায়গা থেকে অন্য উঁচু জায়গার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণ করার মাধ্যমে। বাঁধ নির্মাণ করার ফলে চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকের পাহাড় শ্রেণী থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের দিক পরিবর্তন হয়, এর ফলে সৃষ্টি হয় এই কৃত্রিম লেকটি। 

এইসব পাহাড় শ্রেণি ভূতাত্ত্বিকভাবে দুপিটিলা স্তর সমষ্টির শিলা দিয়ে গঠিত। এই লেকের পাশেই আছে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়, যার নাম “বাটালি পাহাড়”। প্রথম দিকে এ লেকটি “পাহাড়তলী লেক” নামে পরিচিত ছিল । তারপর ব্রিটিশ রেল প্রকৌশলী ফয় (Foy) এর নাম অনুসারে এই লেকের নামকরণ করা হয় ফয়েজ লেক। প্রকৌশলী ফয় এই লেকটির  নকশা তৈরি করেছিলেন। 

দীর্ঘ সময় ধরে অযত্নে পড়ে থাকা ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) এক সময় তার জাঁকজমকতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছিল। পরবর্তীতে এই লেকের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সঙ্গতি রেখে ২০০৫ সালে কৃত্রিম লেকের পাশে তৈরি করা হয় একটি আধুনিক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক (Amusement Park) এবং বেশ কিছু রিসোর্ট। বাংলাদেশের বৃহত্তম নির্মাণ কোম্পানি কনকর্ড (Concord) এই বিনোদন পার্কটি নির্মাণ করেন। 

“ফয়েজ লেক কনকর্ড” নামের পার্কটিতে আগত পর্যটকরা বোটিং, ডাইনিং, হাইকিং এবং লেকসাইড পারফরম্যান্স উপভোগ করতে পারেন। বর্তমানে এখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির পাখি এবং হরিণ দেখার সুব্যবস্থা। পর্যটকদের থাকার জন্যও রয়েছে ব্যবস্থা এই বিনোদন কেন্দ্রটিতে।

বর্তমানে নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে ১০ টি তাবু (Tent)। এর আশেপাশের মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষণের জন্য প্রতি বছর দেশী-বিদেশী বহু পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। ফয়েজ লেক বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকাধীন।  

ফয়েজ লেক – বর্ণনা 

ব্যস্ত জীবন, শহরের কোলাহল সবকিছু ছেড়ে অবসরে প্রাণভরে নির্মল আলো-বাতাস নিতে কার না ভালো লাগে। সেই আনন্দ আপনি পেতে পারেন বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অবস্থিত অত্যন্ত সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান ফয়েজ লেক। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা এই লেকের অপার সৌন্দর্য এবং মনমাতানো মনোরম পরিবেশ দর্শনার্থীদের দারুন ভাবে মুগ্ধ করে। 

অ্যামিউজমেন্ট পার্কে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ফ্যামিলি ট্রেন, ড্রাই স্লাইড, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, বোট রাইডিং, পাইরেট শিপ, ল্যান্ডস্কেপিং সহ বেশ কয়েকটা আকর্ষণীয় রাইড। শিশুদের জন্যও রয়েছে নানা রকম রাইড এর ব্যবস্থা। এছাড়াও রয়েছে পিকনিক স্পট, পর্যটন টাওয়ার, হরিণের বিচরণক্ষেত্র, একটি ওয়াটার থিম পার্ক যার নাম “সী ওয়ার্ল্ড “। 

ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে নৌকা। লেকের পাড়ে সারি সারি নৌকা বাঁধা থাকে। লেকের অপরূপ সৌন্দর্য আপনার মনকে মুহুর্তের মধ্যেই চাঙ্গা করে তুলবে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান নৌকায় করে ঘুরে দেখতে পারবেন ফয়েজ লেকের সৌন্দর্য।

এছাড়াও ইঞ্জিন চালিত নৌকা এবং স্পিড বোটের ব্যবস্থা আছে। এই হ্রদের আরো একটি মনোমুগ্ধকর এবং আকর্ষণীয় বিনোদন হল এখানে অবস্থিত ওয়াটার থিমপার্ক। ওয়াটার কোস্টার এবং আধুনিক ওয়াটার পার্কের সব রকম রাইড পাবেন এখানে গেলে।

আরও পড়ুনঃ চন্দ্রনাথ পাহাড় ভ্রমণ, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম

ভৌতিক ফয়েজ লেক 

ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) কে বলা যায় “বাংলাদেশের ভয়ংকর সৌন্দর্য “। এই লেক / হ্রদ সৃষ্টি করার সময় থেকেই এর ভয়ংকর ইতিহাসের উৎপত্তি হয়। লোকমুখে অনেক ভয়ঙ্কর গল্প শোনা যায় এই লেক সম্পর্কে। ১০০ বছরেরও বেশি পুরানো এই হ্রদটির ভৌতিক ঘটনাগুলো কবে এবং কিভাবে ঘটেছে কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনা। দুইটি বেশি প্রচলিত ভৌতিক ঘটনার বর্ণনা নিম্নে দেওয়া হল :

১. ভৌতিক কালো ছায়া

ভৌতিক কালো ছায়া এর ইতিহাস প্রায় ১৩০ বছরের পুরানো। অনেকেই বলে পুরানো ফয়েজ লেকের ব্রিজটি অতিক্রম করার সময় একটি অশরীরী কালো ছায়া লোকদেরকে আক্রমণ করেছিল। আবার অনেকের ভাষ্যমতে, সেইখানে আসলে দুইটি অশরীরী আত্মা আছে।

তাদের মধ্যে একজন ভালো আত্মা, যাকে একজন কম বয়স্ক মহিলার বেশে দেখা যায়। আরেকজন খারাপ আত্মা, যাকে কালো ছায়া বা বেশি বয়স্ক মহিলা হিসেবে দেখা যায়। অনেকেরই ধারণা, এই দুই সত্তার মধ্যকার দ্বন্দ্ব শতাব্দীর পর শতাব্দী চলে আসছে এবং এদের প্রত্যেকেই অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতার অধিকারী। 

২. উড়ন্ত আগুনের গোলা

ফয়েজ লেকের Foy’s Lake) রোমাঞ্চকর ভৌতিক ঘটনার আরেকটি হলো উড়ন্ত আগুনের গোলা। এই ঘটনা ওই এলাকার অনেকেই প্রত্যক্ষদর্শী বলে শোনা যায়। সেখানকার স্থানীয় লোকেরা দাবি করেন, তারা মাঝে মধ্যেই রাতে বিভিন্ন আকারের আগুনের গোলা ফয়েজ লেক এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে উড়ে যেতে দেখেন। তবে কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারেনি যে এগুলো আসলে কি! অনেকেই আবার দাবি করেন এগুলো আসলে জ্বিনের অস্তিত্ব প্রকাশ করে।

আরও পড়ুনঃ নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্ট (গাজীপুর)

ফয়েজ লেকে যাওয়ার উপায় 

দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে চট্টগ্রামে যেতে হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আপনি বাস, ট্রেন অথবা আকাশ পথে যেতে পারবেন।

বাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম

ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে চট্টগ্রামগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাস চলাচল করে। এসি এবং নন-এসি উভয় ধরনের বাসই পাবেন । এসি বাস ভাড়া ৮০০-১২৫০ টাকা এবং নন-এসি বাস ভাড়া ৪৮০-৬৭০ টাকা। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসের তালিকা সমূহ : 

এসি বাস 

  • গ্রীন লাইন (01730-060009) : ১২০০ টাকা
  • দেশ ট্রাভেলস (01762-684430) : ১০০০ টাকা 
  • এনা পরিবহন (01760-737650) : ৮০০ টাকা
  • সেন্টমার্টিন পরিবহন (01762-691341) : ৯০০ টাকা
  • টি আর ট্রাভেলস (01191-494864) : ১২৫০ টাকা
  • সিল্ক লাইন (01844-191800) : ১০০০ টাকা
  • সৌদিয়া কোচ সার্ভিস (01919-654932) : ১২৫০ টাকা 

নন-এসি বাস 

  • ঈগল পরিবহন (01793-328037) : ৪৮০ টাকা 
  • এনা পরিবহন (01760-737650) : ৪৮০ টাকা 
  • হানিফ এন্টারপ্রাইজ (01713-049540) : ৬৭০ টাকা 
  • সৌদিয়া কোচ সার্ভিস (01919-654932) : ৪৮০ টাকা 
  • ইউনিক সার্ভিস : ৪৮০ টাকা 
  • এস আলম পরিবহন : ৪৮০ টাকা 

ট্রেনে ঢাকা-চট্টগ্রাম

ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনে করে চট্টগ্রামে যাওয়া যায়। ট্রেন ভাড়া শ্রেণীভেদে ১৬০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত। 

  • মহানগর প্রভাতী : সকাল ৭ঃ৪০ মিনিটে ছাড়ে।   
  • চট্টলা এক্সপ্রেস : সকাল ৯ঃ২০ মিনিটে ছাড়ে।
  • মহানগর গোধূলি : বিকেল ৩ টায় ছাড়ে।
  • সুবর্ণ এক্সপ্রেস : বিকেল ৪ঃ২০ মিনিটে ছাড়ে। 
  • তূর্ণা : রাত ১১ টায় ছাড়ে। 

আকাশপথে ঢাকা-চট্টগ্রাম

বিমানে করে সরাসরি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বিমানসমূহ – 

  • বাংলাদেশ বিমান (০২-৯৫৬০১৫১-১০)
  • জিএমজি এয়ারলাইন্স (০২-৮৯২২২৪৮)
  • ইউনাইটেড এয়ার (০২-৮৯৫৭৬৪০)
  • রিজেন্ট এয়ার (০২-৮৯৫৩০০৩)

সিলেট-চট্টগ্রাম

সিলেট থেকে আপনি সড়ক এবং রেলপথে চট্টগ্রামে যেতে পারবেন। সড়কপথে গ্রীন লাইন পরিবহনের এসি এবং নন-এসি বাস চলাচল করে চট্টগ্রামে। এছাড়াও সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনের মাধ্যমে যেতে পারবেন চট্টগ্রামে। ভাড়া শ্রেণীভেদে ১৭৫ থেকে ১২০০ টাকা। 

  • আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস : প্রতিদিন সকাল ১০ঃ১৫ মিনিটে  ছাড়ে (শনিবার ব্যতীত)।
  • আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস : প্রতিদিন রাত ৯ঃ২০ মিনিটে  ছাড়ে (রবিবার ব্যতীত)।
  • মেইল ট্রেন জালালাবাদ এক্সপ্রেস : প্রতিদিন রাত ১০ঃ৩০ মিনিটে ছাড়ে। 

চট্টগ্রাম-ফয়েজ লেক 

চট্টগ্রাম থেকে ফয়েজ লেক (Foy’s Lake) এর দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের জিইসি মোড় থেকে সিএনজি অথবা রিক্সায় করে যেতে পারবেন ফয়েজ লেকে। সিএনজি ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং রিকশা ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

কোথায় থাকবেন 

ফয়েজ লেকের (Foy’s Lake) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থা। রয়েছে দারুন সব কটেজ এবং রিসোর্ট। বর্তমানে সংযোজন করা হয়েছে ১০ টি তাবু। লেকের ধারে তাবুগুলোর প্রতিটিতে থাকতে পারবেন দুইজন করে। নব দম্পতিদের জন্য আছে হানিমুন কটেজ।

ফয়েজ লেক রিসোর্টে প্রতিদিন রাত যাপন করার জন্য ২৫০০ থেকে ৭০০০ টাকা এবং রিসোর্ট বাংলোয় প্রতিদিন রাত যাপন করার জন্য ৩০০০ থেকে ৬০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।  এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল। পছন্দ মত বাজেট অনুযায়ী থাকতে পারবেন এসব হোটেলগুলোতে। নিম্নে চট্টগ্রামের কয়েকটি হোটেলের তালিকা দেওয়া হলো :

. হোটেল প‌্যারামাউন্ট (স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম)

 নতুন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত। বাজেটের মধ্যে সেরা হোটেল এটি। সুন্দর লোকেশন, প্রশস্ত করিডোর। হোটেলের রুমগুলোও ভালো। ভাড়া নন-এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, নন-এসি ডাবল ১৩০০ টাকা এবং এসি সিঙ্গেল ১৪০০ টাকা ও এসি ডাবল ১৮০০ টাকা। বুকিং এর জন্য : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪

২. হোটেল এশিয়ান এসআর (স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম)

অনেক সুন্দর  ছিমছাম পরিচ্ছন্ন একটি হোটেল। ভাড়া নন-এসি : ১০০০ টাকা এবং এসি ১৭২৫ টাকা। বুকিং এর জন্য : ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫

৩. হোটেল সাফিনা (এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম)

পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল এটি । এই হোটেলের ছাদের ওপর একটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট রয়েছে। রাতের বেলা সেখানে বসলে আপনার একদমই আসতে ইচ্ছে করবেনা। ভাড়া  ৭০০ টাকা থেকে শুরু (এসি ১৩০০ টাকা)। বুকিং এর জন্য : ০৩১-০৬১৪০০৪

৪. হোটেল নাবা ইন (রোড ৫, প্লট-৬০, ও,আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম)

যাদের বাজেট বেশি তারা এই হোটেলে থাকতে পারেন । নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় যারা থাকতে চান তাদের জন্য এই হোটেলটি ভালো হবে । ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা। বুকিং এর জন্য : ০১৭৫৫-৫৬৪৩৮২

৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক (৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম)

আগ্রাবাদে থাক তে চাইলে এই হোটেলটি ভালো হবে। ভাড়া ২৩০০/৩৪০০ টাকা। বুকিং এর জন্য : ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭

ফয়েজ লেকের প্রবেশ মূল্য 

  • ফয়েজ লেক প্রবেশের টিকেট মূল্য : জনপ্রতি ৩০০ টাকা। 
  • সকল রাইড এবং আইসক্রিমসহ প্রবেশের টিকেট মূল্য : ৩৫০ টাকা (বোট রাইড এবং বাম্পার কার ব্যতীত) 
  • সি ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ মূল্য : ৪০০, ৫০০ এবং ৬০০ টাকার তিনটি প্যাকেজ রয়েছে। 
  • নৌকা ভ্রমণ : ১০০ টাকা। 
  • এছাড়া বিভিন্ন রাইডে ওঠার জন্য বিভিন্ন রকম ফি রয়েছে।

ফয়েজ লেক – যোগাযোগ 

  • ঢাকা অফিস : 9896482 , 01913-531386 , 8833786
  • চট্রগ্রাম অফিস : 01913-531480, 031-2566080, 01913-531554
  • Website:  Foys Lake
  • Facebook: Foy’s Lake Concord
  • Instagram: Foy’s Lake Concord
  • YouTube: Foy’s Lake Concord

চট্টগ্রাম জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ 

  • পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত 
  • চন্দ্রনাথ পাহাড় এবং মন্দির 
  • সীতাকুন্ড ইকোপার্ক 
  • গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত 
  • বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত 
  • মহামায়া লেক 
  • কুমিরা ঘাট, সীতাকুণ্ড 
  • জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর 
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় 
  • চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা 
  • লালদিঘি
  • মহামুনি বৌদ্ধবিহার 
  • রাঙ্গুনিয়া কোদালিয়া চা বাগান 
  • চালান্দা গিরিপথ 
  • কালুর ঘাট ব্রিজ 
  • চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য 
  • বাওয়াছড়া লেক
  • পারকি সমুদ্র সৈকত  
  • বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত 
  • হাজারী খিল অভয়ারণ্য 
  • বাঁশখালী ইকোপার্ক 
  • প্রজাপতি পার্ক 

শেষকথা 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এডভেঞ্চার, বিনোদন সবকিছু মিলিয়ে অন্যতম দর্শনীয় স্থান ফয়েজ লেক (Foy’s Lake)। ৩৩৬ একরের বিশাল এই লেকটিতে ছোট-বড় সব বয়স্ক লোকেদের জন্য রয়েছে বিনোদনের সুব্যবস্থা । তাই আপনার পরিবার সহ যেতে পারেন অবসর যাপনের জন্য কৃত্রিম এই হ্রদের পারে। অপরূপ নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা ফয়েজ লেক।

অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত এ লেকের প্রধান আকর্ষণ পাহাড়ি প্রকৃতি। উপরে নীল আকাশ, নিচে লেকের নীল পানি এবং চারপাশে সবুজ পাহাড় কি এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি তাই না! প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নৌকা ভ্রমন, হরিণের দর্শন, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হরেক রকম রাইড সবকিছু মিলিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য একটি উত্তম জায়গা।

সেখানকার টিলার ওপরে অবস্থিত পর্যবেক্ষন টাওয়ার থেকে দেখতে পাবেন চট্টগ্রাম শহরের “বার্ডস আই ভিউ”। তাই দেরি না করে আজই আপনার ভ্রমন পরিকল্পনা করুন। 

ফয়েজ লেক সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ’s 

১. ফয়েজ লেক কোথায় অবস্থিত? 

উত্তর : চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী রেলস্টেশনের অদূরে খুলশি এলাকায় অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন ফয়েজ লেক (Foy’s Lake)।

২. ফয়েজ লেক খোলা এবং বন্ধের সময়সূচী কখন?

উত্তর :  খোলার সময় : সকাল ১০ঃ৩০ মিনিট। বন্ধের সময় : রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার   সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। শুক্রবার এবং শনিবার ফয়েজ লেক বন্ধ করা হয় সন্ধ্যা ৭ টায়।

৩. ফয়েজ লেকের মালিক কে? 

উত্তর : ফয়েজ লেক বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন। 

৪. ফয়েজ লেকে ডে-টুর দেওয়া যাবে কি? 

উত্তর : হ্যাঁ, ডে-টুর দেওয়া যাবে । তবে সেক্ষেত্রে অনেক সকাল-সকাল আপনাকে আসতে হবে ফয়েজ লেকে। এত বিশাল আয়তনের উপর অবস্থিত এই লেক এক বেলায় দেখা সম্ভব নয়। 

আরও পড়ুন-

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান ভ্রমন

ভুটান ভ্রমণ – ভ্রমন পরিকল্পনা ও খরচ

মন্তব্য করুন