পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি 

আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি জসিম উদ্দিন “পল্লীকবি” উপাধিতে ভূষিত। তিনি একাধারে কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক এবং লেখক। ঐতিহ্যবাহী বাংলা কবিতার মূল ধারাটিকে নগরসভায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের।

পদ্মা, মধুমতি এবং কুমার নদীর অববাহিকায় অবস্থিত দেশের প্রাচীন জনপদ ফরিদপুর জেলা। এই ফরিদপুর জেলাতেই জন্মগ্রহণ করেছেন পল্লী কবি জসীম উদ্দিন। আজকে আলোচনা করব পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি সম্পর্কে।

কবি ঔপনিবেশিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও তার কাব্য সাহিত্যের উপজীব্য হিসেবে ছিল বাংলার পল্লী প্রকৃতির রূপমাধুর্য, গ্রামের সহজ সরল মানুষের জীবন। কবির সাথে ছিল প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক। কবির ভাষায় – 

তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,

গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;

মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি

মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি,

মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভাইয়ের স্নেহের ছায়,

তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়।

আরও পড়ুনঃ মহেরা জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইল

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের জন্ম এবং মৃত্যু 

ফরিদপুর সদর উপজেলার তাম্বুলখানা গ্রামে ১৯০৩ সালের ১ মার্চ পল্লী কবির জন্ম। কবি জন্মগ্রহণ করেছিলেন তার নানার বাড়িতে। ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর রেলস্টেশন এর উত্তরে কুমার নদের দক্ষিণে অবস্থিত গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি।

বাংলার পল্লী অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী যাদের প্রধান উপজীবিকা কৃষি, পল্লী কবির আবির্ভাব তাদের মধ্যেই। পল্লী প্রকৃতি এবং সেখানকার সহজ সরল মানুষের জীবন ছিল তার কাব্য সাহিত্যের উপজীব্য বিষয়।  কবির বাল্যকাল, কৈশোর এবং যৌবনের অনেকটা সময় কেটেছে এ পল্লীতে।

১৯৭৬ সালের ১৩ই মার্চ ঢাকায় পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে নিজ গ্রাম গোবিন্দপুরে ১৪ই মার্চ ডালিম গাছের তলে তাকে চিরতরে শায়িত করা হয়েছে। এছাড়াও কবরস্থানে চিরতরে শায়িত আছেন –

১) কবির পিতা-মৌঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা (মৃত্যুঃ ২৬-১১-১৯৪৩), 

২) মাতা- আমেনা খাতুন (রাঙ্গা ছোটু) (মৃত্যুঃ ১৫-১০-১৯৫৩), 

৩) কবির পত্নী- বেগম মমতাজ জসীম উদ্দিন (মৃত্যুঃ ১৪-০১-২০০৬), 

৪) বড় ছেলে- কামাল আনোয়ার (হাসু) (মৃত্যুঃ ০৩-৬-১৯৯০),

৫) বড় ছেলের স্ত্রী- জরীনা (মৃত্যুঃ ৩০-৬-১৯৬৩),

৬) কবির বড় ভাই- আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন মোল্লা (মৃত্যুঃ ১৪-৪-১৯৬৩),

৭) কবির সেজো ভাই- সাঈদ ইদ্দন আহম্মদ মোল্লা (মৃত্যুঃ ২৪-৩-১৯৭৫), 

৮) কবির ছোট ভাই-প্রফেসর নুরুদ্দীন আহম্মদ (মৃত্যুঃ ০১-৭-১৯৬৪),

৯) কবির ছোট বোন-নূরুন নাহার (সাজু) (মৃত্যুঃ ১০-১১-১৯৫০), 

১০) কবির নাতিন- আসিফ (মৃত্যুঃ ৩০-৩-১৯৮০),

১১) কবির সেজো ভাইয়ের মেয়ে- মোসাঃ হোসনে আরা (দোলন) (মৃত্যুঃ ২১-৪-১৯৭৩),

১২) কবির সেজো ভাইয়ের নাতনী-মনজুরা শাহরীন (চাঁদনী) (মৃত্যুঃ ০৮-৬-২০০৭ ) এবং 

১৩) কবির শিশু ভাগিনীর কবর।

আরও পড়ুনঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ির বর্ণনা 

ফরিদপুর জেলার কুমার নদের দক্ষিণে অবস্থিত গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি। নদীর সামনে বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে আগত দর্শনার্থীদের জন্য বসার স্থান। অতি সাধারণ ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন পল্লীকবি জসীমউদ্দীন। পল্লী কবির বাড়ির আঙিনায় চারটি দোচালা টিনের ঘর আছে। দক্ষিণ দিকের ঘরটি কবির।

সেই ঘরের বারান্দায় ছোট ছোট পাটের ছিকা আছে । রয়েছে নকশা করা মাটির রঙিন কলস। কবির স্মৃতিঘরে তার বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তুলে চার দেয়ালে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তার কাঠের আলমারি থেকে শুরু করে একটি সুন্দর পালকিও আছে। তার স্মৃতিঘরের দুটি আলমারিতে সাজানো আছে অসংখ্য মাটির পুতুল।

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি গেলে দেখতে পাবেন উঠানের পূর্ব দিকে ঢেঁকি-ঘরটি এখনো স্মৃতিস্বরূপ হিসেবে আছে। । ঢেঁকি-ঘরের পাশেই রয়েছে আরেকটি ঘর। সেই ঘরে রাখা হয়েছে অনেক ছবি। তার মধ্যে রয়েছে তার পত্নী মমতাজ জসিম উদ্দিন এর ছবিও। ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন কবি। বিয়ের অনেক আগেই পল্লীকবি জসীমউদ্দীন তার অমর কবিতা “কবর” রচনা করেছিলেন । 

২০১১ সালে নির্মাণ করা হয়েছে কবির পিতা আনসার উদ্দীনের স্মৃতি ঘর। এখানে আছে কাঠের আলমারি, ব্যবহৃত জিনিস এবং বিভিন্ন ছবি। ঘরের মাঝখানে কাচের চারকোনা বাক্সে রাখা হয়েছে তখনকার সময়ের ব্যবহৃত শাড়ি, চাদর, টাইপ মেশিন, কলম ইত্যাদি।

সেই ঘরে দেখতে পাবেন কবির পিতা-মাতার ছবিসহ তার পুরো বংশ পরিচয়। পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি গেলে দেখতে পাবেন কবিসহ তার পরিবারের অনেক সদস্যের কবর। বাড়ির উত্তরে রাস্তার পাশে মাটি থেকে কিছুটা উঁচুতে কবরস্থান অবস্থিত।

পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের লেখাপড়া এবং কর্মজীবন 

কবির শৈশবে ফরিদপুর হিতৈষী স্কুলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। এরপর ফরিদপুর জেলা স্কুল (বর্তমান “ফরিদপুর জিলা স্কুল”) থেকে প্রবেশিকা (১৯২১), রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আই.এ (১৯২৪),  বি.এ (১৯২৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ (১৯৩১) পাস করেন। কবির পিতা আনসার উদ্দিন মোল্লা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। 

পল্লী কবির কর্মজীবন শুরু হয় পল্লী সাহিত্যের সংগ্রাহক হিসাবে। স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যায়নকালে দীনেশচন্দ্র সেনের আনুকূল্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এই কাজে নিযুক্ত হন তিনি। এমএ পাস করার পর থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে “রামতনু লাহিড়ী” গবেষণা সহকারি ছিলেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ১৯৩৮ সালে তিনি লেকচারের পদে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন। এরপর ১৯৪৪ সাল থেকে প্রথমে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৬২ সালে এখান থেকে ডেপুটি ডাইরেক্টর হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর ঢাকার নিজ বাড়ি কমলাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার দৃঢ় সমর্থক। পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন তিনি। 

পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের সাহিত্য চর্চা 

অল্প বয়স থেকেই জসিমউদ্দিন লেখালেখি শুরু করেছিলেন। তার কবিতায় পল্লী জীবন এবং পল্লী প্রকৃতির সহজ সরল রূপটি তুলে ধরা হয়েছে। কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের বিয়োগান্ত দৃশ্যে “কবর” কবিতাটি লেখেন। সাবলীল ভাষায় লেখা এই কবিতা তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই প্রবেশিকার বাংলা পাঠ্যবইয়ে স্থান পায়। কবর কবিতাটি লিখে তিনি বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। 

পল্লীকবি জসীমউদ্দীন সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন। যেমন: গাথাকাব্য, খন্ডকাব্য, নাটক, স্মৃতিকথা, শিশু সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ “রাখালী”। এটি প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। তার সাহিত্য কর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – 

  • নকশি কাঁথার মাঠ -১৯২৯
  • সোজন বাদিয়ার ঘাট – ১৯৩৩
  • রঙ্গিলা নায়ের মাঝি -১৯৩৫
  • পদ্মাপার- ১৯৫০
  • মাটির কান্না – ১৯৫১
  • বেদের মেয়ে – ১৯৫১
  • পল্লীবধূ – ১৯৫৬ 
  • গ্রামের মায়া – ১৯৫৯ 
  • সুচয়নী – ১৯৬১
  • ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় – ১৯৬১
  • পদ্মা নদীর দেশে – ১৯৬৯
  • ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে – ১৯৭২
  • জার্মানীর শহরে বন্দরে – ১৯৭৫
  • স্মরণের সরণী বাহি – ১৯৭৮
  • বাঙালির হাসির গল্প 
  • ডালিম কুমার ইত্যাদি 

তিনি জারীগান (১৯৬৮) এবং মুর্শীদা গান (১৯৭৭) নামে লোকসংগীত এর দুইটি গ্রন্থ সংকলন এবং সম্পাদনা করেন। তার সম্পাদনায় কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয় জারীগান ১৯৬৮ সালে। একান্তভাবেই বাংলাদেশের নিজস্ব সৃষ্টি জারি গান। জসীমউদ্দীনের এ গ্রন্থে জারি গানের মোট ২৩ টি পালা সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি জারি গানের উৎস এবং বিভিন্ন এলাকার জারি গানের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। মৃত্যুর পর তার দ্বিতীয় গ্রন্থটি প্রকাশ পায়।

পল্লীকবির বাড়িতে কিভাবে যাবেন 

পল্লী কবির বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে দেশের যেকোনো স্থান থেকে ফরিদপুর শহরে যেতে হবে। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘন্টা। রাজধানী ঢাকা থেকে ফরিদপুরগামী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে –

  • গোল্ডলাইন এবং আজমিরি এন্টারপ্রাইজ : ০৬৩১-৬৬৯৮৮, ০১৭৫৫-৫২২২০০
  • জাকের এন্টারপ্রাইজ : ০১৭১২-৪২৪১৩৪
  • সাউদিয়া পরিবহন : ০৬৩১-৬৩৬৪৪, ০১৯১৬-১৩৬৫৩১, ০১৭১৭-৬০৫৫৭৬

ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে গোল্ডেন লাইন এবং সাউথ লাইন পরিবহনের বাস যাতায়াত করে ফরিদপুরে। ভাড়া: নন-এসি ৩০০ টাকা এবং এসি ৬০০ টাকা। এই দুটি বাস চেয়ারকোচ এবং বাকি বাস গুলা নরমাল। 

  • সাউথ লাইন : ০১৭১৩- ২৮৫৪০০

ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পল্লী কবির বাড়ি। বাসস্ট্যান্ড থেকে রিক্সা, অটোরিক্সা বা প্রাইভেট কারের মাধ্যমে কবির বাড়িতে যেতে পারবেন। রিক্সা ভাড়া ৫০ টাকা এবং অটোরিকশা ভাড়া ২০ টাকা।

আরও পড়ুনঃ আহসান মঞ্জিল ( ইসলামপুর, পুরনো ঢাকা )

কোথায় থাকবেন 

ফরিদপুর শহরে যাওয়ার পর ভ্রমণকারীদের থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল। আবাসিক হোটেল গুলোর দূরত্ব ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে মাত্র এক কিলোমিটার। রিক্সা ভাড়া নিবে ১০ টাকা। হোটেল গুলোর ভাড়া সর্বনিম্ন ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত। সিঙ্গেল এবং ডাবল বেড উভয়ই পাবেন হোটেলগুলোতে। সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য রয়েছে সার্কিট হাউস। ফরিদপুর শহরের আবাসিক হোটেল গুলোর তথ্য নিম্নে দেওয়া হল –

★ হোটেল র‌্যাফেল ইনস (০৬৩১-৬১১০৬) : এসি ৯০০ টাকা এবং নন-এসি ৩৪০ টাকা ভাড়া । 

★ হোটেল লাক্সারী (০৬৩১-৬২৬২৩) : এসি ৯০০ টাকা এবং নন-এসি ৩৪০ টাকা ভাড়া । 

★ হোটেল পদ্মা (০৬৩১-৬২৬৮৫) : এসি ৪০০ টাকা এবং নন-এসি ১৬০ টাকা ভাড়া । 

★ হোটেল পার্ক প্যালেস (০১৫৫৬-৩২৭০৬৭) : এসি ৩৫০ টাকা এবং নন-এসি ১৫০ টাকা ভাড়া । 

★ হোটেল শ্যামলী (০৬৩১-৬৪৫৩৮) : এসি ৩৫০ টাকা এবং নন-এসি ১৫০ টাকা ভাড়া । 

★ হোটেল জোনাকী (০৬৩১-৬৪১৬৮) : নন-এসি ৬০ টাকা ভাড়া । 

★ রাজ বোডিং (০১৭২৫-০৬৮৭৮৮) : নন-এসি ৮০ টাকা ভাড়া । 

★ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট : নন-এসি ১০০ টাকা ভাড়া । 

শেষকথা 

পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাল্যকাল, কৈশোর এবং যৌবনের অনেকটা সময় কেটেছে পল্লীতে। সে বেড়ে উঠেছে গ্রামের মাঠ, ঘাট, নদীর তীর এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে। তার কাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে পল্লীর প্রকৃতি এবং জীবন সম্পর্কে। পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। সেই বাড়িতে রয়েছে চারটি পুরাতন টিনের চালাঘর। সংরক্ষিত আছে কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র।

বাড়ির চত্বরে প্রদর্শন করার আছে কবির বিভিন্ন লেখা। কবির বাড়ির পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে প্রতিবেশীদের বসত বাড়ি। বাড়ির দক্ষিণ দিকে আছে ছোট একটি পুকুর। কবির বাড়ির উত্তরে রয়েছে কবরস্থান। ডালিম গাছের তলে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন পল্লী কবি। সেই কবরস্থানের পাশে রয়েছে পাকা রাস্তায় এবং কুমার নদ।

কবির রচিত নকশী কাঁথার মাঠ এবং সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শন গুলির মধ্যে অন্যতম। কবির কিছু কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ’s

১। কবি জসিম উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি কোথায়?

উত্তরঃ ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলায় গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লী কবি জসীমউদ্দিনের বাড়ি

২। জসীমউদ্দীন এর আসল নাম কি?

উত্তরঃআসল নাম মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন মোল্লা।

৩। জসীমউদ্দীনের প্রথম কবিতা কোনটি?

উত্তরঃ কবি জসীমউদ্দিন (Jasimuddin) –এর প্রকাশিত প্রথম কবিতা (লেখা) “মিলন গান”। কবিতা টি ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন-

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান

কুমিরা ঘাট, চট্রগ্রাম

মন্তব্য করুন