শালবন বিহার, কুমিল্লা

শালবন বিহার 

সেন্ট অগাস্টাইন বলেছিলেন, ” পুরো পৃথিবী একটি বই এবং যারা ভ্রমণ করেনা তারা কেবল এর একটি পৃষ্ঠা পড়ে। ” ভ্রমণ মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ হলেও এতে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। ভ্রমনপিপাসুদেরকে আজকে পরিচয় করিয়ে দিবো বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন শালবন বিহার (Shalbon Bihar) সম্পর্কে।

কুমিল্লার ময়নামতিতে খননকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার কোটবাড়িতে অবস্থিত শালবন বিহার এর অপর নাম শালবন বৌদ্ধ বিহার (Shalbon Buddha Bihar)। পূর্বে এই অঞ্চলে শাল ও গজারির বন ছিল বলে বিহারটি শালবন বিহার নামে পরিচিত।

১৫৫ টি কক্ষ বিশিষ্ট এই বিহারের প্রবেশ পথ মাত্র একটি। প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে বিহারের ধ্বংসাবশেষ থেকে ৮ টি তাম্রলিপি, অসংখ্য পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটা, প্রায় ৪০০ টি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, সিলমোহর, ব্রোঞ্জ  ও মাটির মূর্তি পাওয়া গেছে। ধারণামতে, বৌদ্ধ ভিক্ষুকরা এই বিহারে বাস করতেন এবং লেখাপড়া ও ধর্মচর্চা করতেন।

এর প্রতিটি কোনায় লুকিয়ে আছে কতই না অজস্র ঘটনা!  খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এর বৌদ্ধবিহার টি প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

আরও পড়ুনঃ কাপ্তাই লেক, রাঙ্গামাটি

শালবন বিহারের অবস্থান 

আজ থেকে প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে বৌদ্ধদের বিদ্যা ও ধর্মচর্চার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল বেশ কিছু বিহার। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত ৯ টি বিহারের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শালবন বিহার (shalbon bihar) অন্যতম। ১২’শ প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত এটি। কুমিল্লা জেলার কোটবাড়িতে বার্ডের কাছে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এই বিহারটি অবস্থিত।

কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বিহার। এর সন্নিহিত গ্রামের নাম শালবনপুর। কুমিল্লা জেলার অবস্থান ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি। এই বিহারটির আশেপাশে  শাল ও গজারির ঘন ছিল বলে শালবন বিহার (Shalbon Bihar) নামে পরিচিত। সেখানে এখনো ছোট একটি বন আছে। বিহারটি (shalbon bihar) দেখতে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের মতো, তবে আকারে কিছুটা ছোট।

বিহারটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি দেখতে যীশুর ক্রুশ আকৃতির মত। এর একক কোন কাঠামো নেই, আছে ছয়টি ভিন্ন কাঠামোর নিদর্শন। ভিতর ও বাহির মিলিয়ে মোট ১১ টি মন্দির ও ৮ টি  স্তুপার সন্ধান পাওয়া গেছে এখানে। কেন্দ্রীয় মন্দিরটি রয়েছে বিহারের ঠিক মাঝখানে। ২০১৫ সালে ইট ও কাদা মাটির একটি কূপের সন্ধান পাওয়া যায় এখানে। 

কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় ১৮৭৫ সালে একটি ইমারতের ধ্বংসাবশেষ প্রত্যক্ষ করেন সবাই। ধারণা করা হচ্ছিল, এটি একটি প্রাচীন দুর্গের অংশ। ১৯১৭ সালে ঢাকা জাদুঘরের অধ্যক্ষ নলিনী কান্ত ভট্টাশালী এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করেন এবং এখানে গবেষণা চালাতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে, ধ্বংসাবশেষগুলো রণবঙ্গমোল্লা হরিকেল দেবের তাম্রশাসনের দুর্গ এবং বিহার দ্বারা বেষ্টিত  “পট্টিকেরা নগর”।

বিহারটির খনন কাজ শুরু হয় ১৯৫৫ সালে। বিভিন্ন সময়ে বিহারের ৬ টি স্থাপনা নির্মাণ এবং পুনর্নির্মাণের কথা জানা যায়। ধারণা মতে, অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে তৃতীয়বারের মতো কেন্দ্রীয় মন্দির নির্মাণ ও বিহারটির সার্বিক সংস্কার করা হয়। পর্যায়ক্রমে অষ্টম ও নবম শতাব্দীতে চতুর্থ ও পঞ্চম বারের মতো বিহারটি সংস্কার করা হয়। 

শালবন বিহারের স্থাপত্যশৈলী 

শালবন বিহারের আকৃতি চৌকো অর্থাৎ আয়তাকার । বিহারের প্রতিটি বাহু ১৬৭.৭ মিটার দীর্ঘ। চারদিকের দেয়াল ৫ মিটার পুরু। কক্ষগুলো বিহারের চারদিকের  বেষ্টনী দেয়াল পিঠ করে নির্মিত। প্রতিটি কক্ষের মধ্যে ১.৫ মিটার চওড়া দেয়াল রয়েছে। সকল দেওয়াল বিশালায়তন এবং ইট দিয়ে নির্মিত। পেছনের দেয়ালগুলো সবচেয়ে পুরো এবং বিশাল। বিহার অঙ্গনের ঠিক মাঝখানে কেন্দ্রীয় মন্দির। সর্বমোট ১১৫ টি কক্ষ রয়েছে এই বিহারে।

কক্ষের সামনে ৮.৫ ফুট চওড়া টানা বারান্দা ও তার শেষ প্রান্তে অনুচ্চ দেয়াল রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের দেয়ালে রয়েছে তিনটি করে কুলুঙ্গি। কুলুঙ্গি গুলোতে প্রতিমা বা তেলের প্রদীপ রাখা হতো। কক্ষগুলোতে থাকতেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। তারা বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চা করতেন। কারণ এটি ছিল প্রাচীন বিদ্যা ও ধর্মচর্চার কেন্দ্র। 

প্রবেশপথের সম্মুখভাগ ২২.৬ মিটার চওড়া। এর দুপাশ থেকে বাইরের দিকে প্রলম্বিত রয়েছে দুটি প্রহরিকক্ষ । প্রবেশদ্বারের পাশে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি হলঘর আছে । চারদিকের দেয়াল ও সামনে চারটি বিশাল গোলাকার স্তম্ভের উপর নির্মিত হলঘরটি ধারণা করা হয় ভিক্ষুদের খাবার ঘর ছিল। হলঘরের আয়তন ১০ মিটার × ২০ মিটার। হলঘরের চতুর্দিকে ইটের চওড়া রাস্তা রয়েছে।

শালবন বিহারের আয়তন ৩৭ একর।  প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে এই বিহারটির (shalbon bihar) ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া যায় আটটি তাম্রলিপি, প্রায় ৪০০ টি সোনা ও রুপার মুদ্রা, অসংখ্য পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটা, সিলমোহর, ব্রোঞ্জ ও মাটির মূর্তি। শালবন বিহার (shalbon bihar) থেকে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ প্রত্নসম্পদ  ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। এগুলো বাংলাদেশের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে। 

শালবন বিহার shalbon bihar
শালবন বিহার, কুমিল্লা

কিভাবে যাবেন 

শালবন বিহার যেতে হলে  দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমে কুমিল্লায় যেতে হবে। 

বাসে শালবন বিহার

 সড়কপথে অর্থাৎ বাসে করে ঢাকা থেকে কুমিল্লা যেতে মাত্র ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগে। দূরত্ব ১০৫ কিলোমিটার। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে কুমিল্লা রুটে অসংখ্য বাস সার্ভিস রয়েছে। ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর থেকে কয়েকটি বাসের তালিকা দেওয়া হল – 

  • উপকূল : ০১৯৮১-০০২৯৩২, ০১৯৮১-০০২৯৪২
  • তিশা : ০১৭৩১-২১৭৩২২
  • বিআরটিসি : ০১৭৭০-৪৯৩৭৭৫
  • স্টার লাইন 
  • রয়েল 
  • এশিয়া লাইন 

এসব পরিবহনে কুমিল্লা আসতে ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ২২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। 

এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে কুমিল্লা যেতে হলে প্রিন্স অথবা সৌদিয়া বাস বেছে নিতে পারেন। অথবা  চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী যেকোন বাসে উঠলেই কুমিল্লায় নেমে যেতে পারবেন। 

বাসে করে কুমিল্লা যাওয়ার সময় যদি বাস কোটবারি স্টেশন হয়ে যায় তাহলে সেখানেই নেমে যাবেন। কোটবারি স্টেশন থেকে খুব সহজেই চলে যাবেন শালবন বৌদ্ধ বিহারে। 

ট্রেনে শালবন বিহার

 রাজধানী ঢাকা থেকে সহজেই আসতে পারবেন কুমিল্লাতে। সুবর্ণা এবং সোনার বাংলা ট্রেন বাদে চট্টগ্রামগামী প্রায় সকল ট্রেন কুমিল্লা স্টেশনে থামে। ঢাকা থেকে কুমিল্লার ট্রেন ভাড়া জনপ্রতি ১৭০ টাকা থেকে ৪৬৬ টাকা। 

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে গেলে বাসের চেয়ে দ্রুত কুমিল্লায় পৌঁছাতে পারবেন। এক্ষেত্রে কুমিল্লা স্টেশনে নেমে যেতে হবে। 

কুমিল্লা থেকে শালবন বিহার

কুমিল্লা শহর থেকে শালবন বিহার (shalbon bihar) যেতে হলে প্রথমে কান্দিরপাড়ে যেতে হবে। কান্দিরপাড় আওয়ামী লীগ অফিসের কাছে কোটবাড়ি যাওয়ার লোকাল সিএনজি স্ট্যান্ড আছে। ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা। এছাড়া কুমিল্লা শহরের যেকোন স্থান থেকে সিএনজি রিজার্ভ করেও কোটবাড়িতে যেতে পারেন। কোটবাড়ি থেকে অটোরিক্সায় ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে শালবন বিহারে যেতে পারবেন। 

কুমিল্লা থেকে লোকাল সিএনজি করেও কোটবাড়ি বিশ্বরোড হয়ে শালবন যাওয়া যায়। ভাড়া এক্ষেত্রে জন প্রতি ২০ টাকা। শালবন বিহার, বৌদ্ধমন্দির, ময়নামতি জাদুঘর কাছাকাছি অবস্থিত। তাই আপনারা চাইলে একই দিনে সবগুলো জায়গায় ভ্রমণ করে আসতে পারেন। দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে কুমিল্লা যেতে হলে সুবিধামতো যানবাহনে চলে যাবেন।

আরও পড়ুনঃ মহামায়া লেক, চট্টগ্রাম

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য কুমিল্লা শহরে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। কুমিল্লা ক্লাব, কুমিল্লা সিটি ক্লাবসহ বেশ কিছু হোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে । এসি এবং নন-এসি সব ধরনের ব্যবস্থাই পাবেন। দুইজনের কক্ষে প্রতি রাতের জন্য খরচ হবে ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। 

মাঝারি মানের হোটেল গুলোর মধ্যে রয়েছে – হোটেল চন্দ্রিমা, হোটেল শালবন, হোটেল আবেদিন, হোটেল সোনালি, হোটেল নিদ্রাবাগ, আশিক রেস্ট হাউস, হোটেল নুরজাহান ইত্যাদি। এসব হোটেলের ভাড়া ২০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।

  • আশিক রেসিডেন্সিয়াল রেস্ট হাউস (১৮৬, নজরুল এভিনিউ কুমিল্লা)  – যোগাযোগ : ৬৮৭৮১
  • হোটেল আবেদিন (স্টেশন রোড, কুমিল্লা) – যোগাযোগ : ৭৬০১৪
  • হোটেল সোনালি (কান্দিরপাড় চত্বর, কুমিল্লা) – যোগাযোগ : ৬৩১৮৮
  • হোটেল নুরজাহান (ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা) – যোগাযোগ : ৬৮৭৩৭

বিশেষ দ্রষ্টব্য : শালবন বিহার থেকে বার্ড অনেক কাছে। বার্ডে যোগাযোগ করে সেখানেও থাকতে পারেন।

কোথায় খাবেন

কুমিল্লায় বিভিন্ন মানের হোটেল/রেস্টুরেন্ট রয়েছে তাই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোন রেস্টুরেন্টে ঢুকে যেতে পারেন। চেখে দেখতে পারেন মনোহরপুর কালী বাড়িস্থ মাতৃভান্ডারের আসল রসমালাইয়ের স্বাদ। তবে কুমিল্লায় গেলে অবশ্যই মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই খেতে ভুলবেন না।আসল মাতৃভান্ডারের রসমালাই খেতে হলে যেতে হবে মনোহরপুর কালীবাড়িতে।

কুমিল্লার কোটবাড়ি থেকে পদুয়ার বাজার যেতে ভাড়া লাগবে জন প্রতি ১৫ টাকা। সেখান থেকে কান্দিরপাড় হয়ে মনোহরপুর কালীবাড়ি। রিকশাভাড়া ৩০ টাকা। কালিবাড়ি মন্দিরের ওপাশে রয়েছে আসল মাতৃভান্ডার এর দোকান। প্রাকৃতিক সভায় নন্দিত কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধ বিহারে (shalbon bihar) অবশ্যই ঘুরে আসবেন। 

টিকেট মুল্য

যেকোন বাংলাদেশিকে শালবন বিহারে প্রবেশের জন্য ২০ টাকার টিকেট কাটতে হয়। দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা ৫ টাকায় শালবন বিহারে প্রবেশের সুযোগ পেয়ে থাকে। সার্কভুক্ত দেশের পর্যটকদের জন্য প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা এবং অন্য সকল বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশের জন্য ২০০ টাকা প্রবেশ মূল্য রাখা হয়।

শালবন বিহার খোলা ও বন্ধের সময়সূচী 

কুমিল্লার শালবন বিহার এবং ময়নামতি জাদুঘর প্রতি রবিবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে। সোমবার অর্ধ দিবস বন্ধ থাকে। 

শীতকালীন (অক্টোবর-মার্চ) সময়সূচী 

  • মঙ্গলবার থেকে শনিবার : সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা (দুপুর ১টা থেকে ১ঃ৩০ বিরতি)। 
  • শুক্রবার : সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ঃ৩০ এবং দুপুর ২ঃ৩০ থেকে বিকেল ৬ টা। 
  • সোমবার : দুপুর ২ঃ৩০ থেকে বিকেল ৫ টা। 

গ্রীষ্মকালীন (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) সময়সূচি 

  • মঙ্গলবার থেকে শনিবার : সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা (দুপুর ১টা থেকে ১ঃ৩০ বিরতি)। 
  • শুক্রবার : সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ঃ৩০ এবং দুপুর ২ঃ৩০ থেকে বিকেল ৬ টা। 
  • সোমবার : দুপুর ২ঃ৩০ থেকে বিকেল ৫ টা। 

শেষ কথা 

ভ্রমণে যে অভিজ্ঞতা হবে, পৃথিবীর আর অন্য কোন কিছুতেই তা পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বৌদ্ধ বিহার ভ্রমণে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। শালবন বিহার (shalbon bihar) ছাড়াও কুমিল্লায় রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। কোটবাড়িতেই রয়েছে ময়নামতি জাদুঘর, নব শালবন বৌদ্ধ বিহার, রুপবান মুড়া, ইটখোলা মুড়া, আনন্দ বিহার।

এছাড়াও কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে – বার্ড, ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক, ময়নামতি ওয়্যার সিমেট্রি, লালমাই পাহাড়, ধর্মসাগর দিঘী, ব্লু ওয়াটার পার্ক ইত্যাদি। শালবন বিহার (shalbon bihar) থেকে ফেরার পথে অবশ্যই ময়নামতি ওয়্যার সিমেট্রি থেকে একটু ঘুরে আসবেন।

পর্যটন স্পটগুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এগুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে। তাই এসব স্থানে প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্যের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা থেকে আমরা অবশ্যই বিরত থাকবো। দেশ আমাদের, তাই দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হওয়ার দায়িত্বও আমাদের। 

শালবন বিহার নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর / FAQ

১. শালবন বিহার কোথায় অবস্থিত? 

উত্তর : বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় শালবন বিহার অবস্থিত। 

২. শালবন বিহারের আসল নাম কি? 

উত্তর : শালবন বিহারের আসল নাম “ভবদেব মহাবিহার”। 

৩. শালবন বিহারের পূর্ব নাম কি? 

উত্তর : পূর্বে শালবন বিহার “রাজার বাড়ি” নামে পরিচিত ছিল । খননের পর একে শালবন বিহার নামে আখ্যায়িত করা হয়। 

৪. শালবন বিহার কোন সভ্যতার নিদর্শন? 

উত্তর : শালবন বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন। 

৫. শালবন বিহার কে নির্মাণ করেন? 

উত্তর : শালবন বিহার খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব নির্মাণ করেন। 

আরও পড়ুন –

পালকি চর সমুদ্র সৈকত

সিলেটের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ  

মন্তব্য করুন